দিনাজপুর সংবাদাতাঃ দিনাজপুরে একসঙ্গে ৪০ জন এতিম কন্যার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার শহরের গ্রিনভিউ কমিউনিটি সেন্টারে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। জেলা লায়ন্স ক্লাবের অধীনে শিশু নিকেতনের এতিম মেয়েদের যৌতুকবিহীন বিয়ের এ আয়োজন করে লায়ন্স ক্লাব।
বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা জয়নুল আবেদীন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি রেজা হুমায়ুন চৌধুরী শামীম, দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল মুঈদ, দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী বাচ্চু, শহর সমাজসেবা অফিসার মাইনুল ইসলাম, করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লায়ন সৈয়দ মিজানুর রহমান, জোন চেয়ারম্যান (ক্লাবস) লায়ন মোজাফফর আলী মিলন প্রমুখ।
আলোকসজ্জা, গেট, ষ্টেজ, ভিডিও, ব্যান্ডপাটি কোন কিছুরই কমতি ছিল না দিনাজপুর শহরের গ্রীনভিউ কমিউনিটি সেন্টারে। কমিউনিটি সেন্টারকে সাজানো হয়েছিল রংবেরং বেলুন দিয়ে। শুক্রবার দুপুরে একই সাথে ৪০ জন পিতামাতাহীন এতিম মেয়েকে বিয়ের অনুষ্ঠানে স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া হলো।
দিনাজপুর লায়ন্স ক্লাবের অধীনে শিশু নিকেতনের নিবাসী এতিম মেয়েদের যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন করে লায়ন্স ক্লাব। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এতিম কন্যাকে তুলে দেওয়া হলো স্বামীদের হাতে। সাজ-সজ্জার পাশাপাশি বরযাত্রীসহ আমন্ত্রিত প্রায় ১২ শ অতিথির মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বিয়ের অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা মোঃ জয়নুল আবেদীন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর চেম্বারের সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী শামীম, দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল মুঈদ, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরুপ বকসী বাচ্চু, শহর সমাজসেবা অফিসার মাইনুল ইসলাম, করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লায়ন সৈয়দ মিজানুর রহমান, জোন চেয়ারম্যান (ক্লাবস) লায়ন মোজাফফর আলী মিলন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লায়ন এ্যাড. আব্দুল মজিদ। এ ছাড়াও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহরের ফুলবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় লায়ন্স ক্লাবের পরিচালনায় শিশু নিকেতন হোম। এখানে ১০১ জন এতিম শিশু কন্যা লোখাপড়ার পাশাপাশি হাতের কাজ, সেলাই এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। এদের মধ্যে ৪০ জন এতিম কন্যার আজকে দুধধাম ও উৎসবমূখর পরিবেশে বিয়ে দেওয়া হলো। ৪০ জন পাত্র ছিলেন দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার। পাত্ররা কেউ ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্টসে চাকুরী করেন, কেউ কৃষি কাজ আবার ওয়ার্কসপের দোকান করেন।
দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদার গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক টেইলার দোকান রয়েছে। বিনা যৌতুকে শিশু নিকেতন হোমের এতিম কন্যা লিজা আক্তারকে বিয়ে করেছেন। রাজ্জাক বললেন, আজকে আমার মত ৪০ জন ভাই যৌতুক না নিয়ে এতিম মেয়েদের বিয়ে করে উদাহারণ সৃষ্টি করেছেন।
আমরা যেন সুখী হতে পারি সকলের কাছে দোয়া চাই। নতুন জীবন ও ঠিকানা পেয়ে খুশি রাজবাটি এলাকার ধানচাল ব্যবসায়ী তহিনুর ইসলামের নববিবাহিতা এতিম কণ্যা হুমায়ারা। হামজাপুর গ্রামের ছেলে মোঃ রবিউল ইসলামের বাবা রায়হানুল ইসলাম বললেন, যৌতুক ছাড়াই আমার ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি। আমি চাই সব অভিভাবক এই কাজটি করুক।
আয়োজক শিশু নিকেতনের সভাপতি মোজাফর আলী মিলন জানান, এই শিশু নিকেতন থেকে প্রতিবছর মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। এবার এক সঙ্গে ৪০ জন এতিম মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হলো। সাইকেল, সেলাই মেশিনসহ সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র দেওয়া হয়েছে।