দিনাজপুর সংবাদাতাঃ দিনাজপুর সদর উপজেলায় স্কয়ার কোম্পানীর আতপ চাল তৈরীর একটি মিলে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ। প্রায় ৯ ঘন্টার অভিযানকালে প্রায় ৪১ কোটি টাকার ৫ হাজার ১২৪ দশমিক ৫৩০ মেট্রিক টন আতপ চাল পেয়েছে তারা। সরকারী নিয়ম বর্হিভুতভাবে বিপুল পরিমানে চাল মজুদ করায় প্রতিষ্ঠানটির ৬টি গোডাউনে রাখা ওই চাল জব্দ করেছে প্রশাসন। একইসাথে এই ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় থেকে বুধবার ভোর রাত আড়াইটা পর্যন্ত দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ বাজারে অবস্থিত স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানীতে এই অভিযান চালায়। যা চলে দিবাগত রাত আড়াইটা পর্যন্ত।
অভিযানকালে মিলের ইনচার্জ উত্তর বংশিপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে জায়েদ হোসেনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মর্তুজা আল মঈদ। এসময় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার এমএ কাদের, দিনাজপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সিংহ রায় উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্কায়ারের মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে মিলের ৬টি গুদামে ৫ হাজার ১২৪
দশমিক ৫৩০ মেট্রিক টন আতপ চালের উপস্থিতি পাওয়া যায়। কিন্তু মিলের অনুমোদন রয়েছে ৩১২ মেট্রিক টন। সে হিসেবে মিলে ৪ হাজার ৮১২ দশমিক ৫৩০ মেট্রিক টন চাল বেশি মজুদ পাওয়া যায়। অভিযান শুরু করা হলে তাদের তাদের কাছে কাগজপত্র ও মিলের চাল মজুদের হিসাব চাওয়া হলে তারা সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
পরে ভ্রাম্যমান আদালত চলাকালে কর্মকর্তারা মিলের বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতের কাজে নিয়োজিত থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের ধরে নিয়ে আসে। পরে রাত আড়াইটার দিকে মিলের ৬টি গুদামে সংরক্ষিত চালগুলো উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের জিম্মায় প্রদান করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এব্যাপারে দিনাজপুর সদর উপজেলা নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সিংহ রায় বাদী হয়ে মিলের স্বত্বাধিকারী অঞ্জন চৌধুরী ও মিলের ইনচার্জ জায়েদ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এত পরিমাণ চাল জব্দ হওয়ায় এটি বিচার ভ্রাম্যমান আদালতে করা সম্ভব নয়। তাই অভিযোগটি কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা জন্য পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও মিলের ইনচার্জ জায়েদ হোসেনকে পুলিশের হেফাজতে প্রদান করা হয়েছে। জব্দকৃত চালের ৮০ টাকা বাজার মূল্য হয়েছে ৪০ কোটি ৯৯ লক্ষ ৬২ হাজার ৪০০ টাকা।
অভিযানকালে মিলের ইনচার্জ জায়েদ হোসেনের বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি মিডিয়ার সামনে কোন কথা বলবেন না বলে জানান।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চলাকালে একজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। স্কয়ার কোম্পানীতে অবৈধভাবে চাল মজুদের ব্যাপারে একটি অভিযোগ এসেছে। তা আমরা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং সেই মামলায় জায়েদ হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে।