সুপার টুয়েলভের বাকি আর মাত্র এক রাউন্ড। কিন্তু এখনও নির্ধারিত হয়নি আসরের কোনো সেমিফাইনালিস্টের নাম। অবশ্য দুই গ্রুপ থেকে একটি করে দলের এরই মধ্যে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। গ্রুপ ওয়ান থেকে আফগানিস্তান আর গ্রুপ টু থেকে নেদারল্যান্ডস তলানিতে থাকায় সেমির সম্ভাবনা নেই তাদের। তবে কাগজে-কলমে বাকি ১০ দলেরই রয়েছে শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা। বাদ পড়তে পারে যে কেউই।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ৩৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোয় সম্ভাবনা বেঁচে রইলো বাংলাদেশেরও। সেমিফাইনালে খেলতে হলে শেষ রাউন্ডে কোন দলের সামনে কী সমীকরণ তা দেখে নেয়া যাক।
গ্রুপ ওয়ান
নিউজিল্যান্ড
গ্রুপ ওয়ানে ৪ ম্যাচ শেষে ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা কিউইরা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেই জায়গা করে নেবে সেমিফাইনালে। তবে হারলেও সম্ভাবনা থাকবে সেমিতে খেলার, সেক্ষেত্রে হারের ব্যবধানটা হতে হবে কম এবং ইংল্যান্ড অথবা অস্ট্রেলিয়া যেকোনো একটি দলকে শেষ ম্যাচে হারতে হবে। কিউইদের রান রেট ২.২৩৩। যা গ্রুপের অন্যান্যদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রাখছে তাদের।
ইংল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডের সমান ৫ পয়েন্ট পাওয়া ইংলিশরা শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেলেও শঙ্কা কিছুটা থেকে যাবে। কারণ গ্রুপের অপর দুই দল নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো এক দলকে হারতে হবে। অথবা রান রেটে এগিয়ে থাকতে হবে জশ বাটলারদের। অবশ্য গ্রুপের শেষ ম্যাচ হওয়ায় খেলতে নামার আগেই নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিতে পারবে ইংল্যান্ড।
অস্ট্রেলিয়া
নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের সমান ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ওয়ানের তিনে রয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হওয়ায় আফগানিস্তান। তবে রান রেট -০.৩০৪ হওয়ায় বেশ দুশ্চিন্তায় অজিরা। আফগানদের বড় ব্যবধানে হারানোর পাশাপাশি অপর দুই প্রতিপক্ষ নিউজল্যান্ড আর ইংল্যান্ডের যেকোনো এক দলের হারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাদের। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার সুবিধা কেবল তাদের প্রতিপক্ষেরই কোনো সম্ভাবনা নেই সেমিফাইনালে খেলার। শ্রীলঙ্কা আর আয়ারল্যান্ডের মতো জয়ের জন্য হয়তো মরিয়া থাকবে না আফগানিস্তান।
শ্রীলঙ্কা
৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে থাকা লঙ্কানদের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেই চলবে না। তাদের ম্যাচের আগের দিন নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া এই দুই দলের যেকোনো এক দলকে হারতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে মাঠে নামার আগেই বিদায় নিশ্চিত হবে শ্রীলঙ্কার।
আয়ারল্যান্ড
৪ ম্যাচ শেষে ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে থাকা আইরিশদের সেমির সম্ভাবনা থাকলেও তা খুবই ক্ষীণ। দুই ম্যাচ আগে ইংল্যান্ডকে হারানো টাকার-স্টার্লিংরা নিউজিল্যান্ডকে মরণ কামড় দিতে পারলে পাল্টে যাবে টেবিলের গোটা চিত্রই। সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে বড় ব্যবধানের জয় তুলে নিয়ে আইরিশদের অপেক্ষা করতে হবে পরের ম্যাচগুলোতে অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের হারের। তবে নিজেদের -১.৫৪৪ রান রেট থেকে নিউজিল্যান্ডের ২.২৩৩ রান রেট টপকে যাওয়া টি-টোয়েন্টিতে আকাশ-কুসুম ভাবনা।
গ্রুপ টু
ভারত
৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টু’র শীর্ষে থাকা ভারতের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। জয় পেলে তো কথাই নেই, এমনকি বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পণ্ড হলেও সেমিফাইনালে জায়গা করে নেবে রাহুল দ্রাবিড়ের দল। জিম্বাবুয়ের কাছে হারলেও শেষ চারের সম্ভাবনা টিকে থাকবে টিম ইন্ডিয়ার। সেক্ষেত্রে কম ব্যবধানে হারের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার হারও দরকার তাদের সেমিতে খেলতে হলে।
দক্ষিণ আফ্রিকা
৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে থাকা প্রোটিয়ারা শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারালেই চলে যাবে সেমিতে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বাতিল হলেও ১.৪৪১ রান রেট থাকায় সম্ভাবনা প্রবল তাদের। সেক্ষেত্রে ভারতের হার আর বাংলাদেশের জয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমির পথে কিছুটা এগিয়ে রাখবে। তবে ডাচদের বিপক্ষে হারলেই বিদায় নিশ্চিত হবে বাভুমার দলের।
পাকিস্তান
৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে থাকা ‘দ্যা আনপ্রেডিকটেবল’ খ্যাত দলটির শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পেলেই হবে না। অপেক্ষা করতে হবে ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার হারেরও। আর বৃষ্টিতে ম্যাচ বাতিল হলে দক্ষিণ আফ্রিকার হার প্রার্থনা করার বিকল্প নেই বাবর আজমদের।
বাংলাদেশ
পাকিস্তানের সমান ৪ পয়েন্ট হলেও -১.২৭৬ রান রেট নিয়ে বেশ শঙ্কায় রয়েছে টাইগাররা। বাংলাদেশের সমীকরণটাও পাকিস্তানের মতো। জয় পেলেই হবে না। নেদারল্যান্ডের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অথবা জিম্বাবুয়ের কাছে ভারতকে হারতে হবে। আর ম্যাচ পণ্ড হলে রান রেটে পিছিয়ে থাকার কারণে বিদায় নেবে সাকিব আল হাসানের দল।
জিম্বাবুয়ে
৪ ম্যাচ শেষে ৩ পয়েন্ট পাওয়া জিম্বাবুয়েরও কিছুটা সম্ভাবনা আছে সেমিফাইনালে খেলার। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে সব সমীকরণ জেনেই নামবে ক্রেইগ এরভিনরা। আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকা হারলে আর বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হলেই কেবল জয়ের জন্য লড়তে পারে জিম্বাবুয়ে। তবে -০.৩১৩ রান রেট থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার রান রেট টপকাতে ভারতের বিপক্ষে যে বিশাল ব্যবধানের জয় দরকার তা টি-টোয়েন্টিতে প্রায় অসম্ভবই।