তিন দিনের ব্যবধানে এলাচ কেজিতে বাড়ল ৪৫০ টাকা – দৈনিক আজাদী

তিন দিনের ব্যবধানে এলাচ কেজিতে বাড়ল ৪৫০ টাকা – দৈনিক আজাদী

খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে গত দুদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি এলাচের দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ খাতুনগঞ্জের বাজারে এলাচের সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। প্রত্যেক দোকানগুদামে পর্যাপ্ত এলাচের মজুদ রয়েছে। এলাচ ছাড়া গরম মসলার অন্যান্য আইটেম জিরা, দারচিনি, লবঙ্গ ও গোল মরিচের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন গরম মসলা ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের কিছু ট্রেডারযারা সব সময় তেলচিনিতে বিনিয়োগ করেন, তারা সম্প্রতি তেলের বাজারে লোকসান হওয়ায় এলাচ কিনে মজুদ করা শুরু করেছেন। এই কয়দিন ধরে এলাচের এই অস্বাভাবিক হাত বদলের কারণে দাম বেড়েই চলেছে। গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকায়। যা গত তিন দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। অর্থাৎ মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪৫০ টাকা বেড়ে গেছে। এছাড়া বর্তমানে জিরা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০ টাকা, গোল মরিচ ৬১০ টাকা, দারচিনি ৩০৫ টাকা এবং লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩৭০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলা ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খাতুনগঞ্জের একশ্রেণীর ডিও বা স্লিপ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক প্রকার জুঁয়া খেলেন। তারা নিজেদের মধ্যে টেডিং করে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম উঠানামা করান। সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি শিল্পগ্রুপের তেলের দরপতন হলে ওই ব্যবসায়ীরা এলাচের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এদের কেউই প্রকৃত মসলা ব্যবসায়ী নয়। দিনে যে পরিমাণ এলাচ কেনাবেচা হয়, এরমধ্যে এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয় না। এসব পণ্য কেবল গুদাম পরিবর্তন হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটি ঠিক বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। কিন্তু খাতুনগঞ্জের বাজারে যেসব মসলা মজুদ আছে, সব আগেই আমদানি হয়েছে। সুতরাং বুকিং দর বাড়ার প্রভাব পড়ার কথা না।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, গরম মসলার মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কেবল এলাচের দামটাই বাড়তি। এটি বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণে হচ্ছে এক শ্রেণী ব্যবসায়ী নিজেদের মধ্যে অস্বাভাবিক ট্রেডিং করছে। এদের মধ্যে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সংখ্যা খুবই কম। এরা যখন তেলের দাম বাড়ে, তখন তেলের দিকে দৌঁড়ায়। এখন যেহেতু তেলের দাম কম, তাই তারা এলাচের বাজারে ট্রেডিং করছে। তবে প্রকৃত অর্থে গরম মসলার দাম আন্তর্জাতিক বাজার হিসেবে এখনো অনেক কম রয়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন আজাদীকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। ওরা প্রয়োজন মতো দাম ওঠানামা করান। গরম মসলা স্লো আইটেম। এটি প্রতিদিনের রান্নায় খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। তারপরেও থেমে নেই ব্যবসায়ীদের কারসাজি। প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, বাজার নিয়ন্ত্রণে তারা যেন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে।

Explore More Districts