আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে একটি সাধারণ খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে? হ্যাঁ, কুমড়ার বীজ হতে পারে সমাধান! এই ক্ষুদ্র বীজ গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি এবং যৌগে পূর্ণ যা ডায়াবেটিস রোগীদের উপকার করতে পারে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং আরও অনেক কিছু করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কুমড়ার বীজের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
কুমড়ার বীজের গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে, তাই এটি রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায় না। এই বীজে ম্যাগনেসিয়াম পূর্ণ, যা গ্লুকোজ বিপাক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ২০১৮ সালে সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা ৬৫ গ্রাম (প্রায় ২ আউন্স) কুমড়ার বীজ দিয়ে খাবার খেয়েছিলেন তাদের উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গিয়েছিল।
২. হজম উন্নত করে
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অপরিহার্য কারণ এটি হজম এবং কার্বোহাইড্রেটের শোষণকে ধীর করে দেয়, রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করে। কুমড়ার বীজে উচ্চ ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্বাস্থ্যকর হজম নিশ্চিত করে। ফাইবার দীর্ঘ সময় ধরে তৃপ্ত রাখে, অতিরিক্ত খাওয়া এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমায়, যা ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ওজন কমাতে সাহায্য করে
ডায়াবেটিস রোগীদের তাদের ওজন সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত কারণ অতিরিক্ত ওজন ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। আপনার খাদ্যতালিকায় কুমড়ার বীজ যোগ করলে এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে কারণ এটি পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরে রাখে। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবারের মিশ্রণ ক্ষুধা দমন করে এবং অবাঞ্ছিত খাবার খাওয়া রোধ করে।
৪. হৃদরোগের উন্নতি করে
আপনি কি জানেন ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে? কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে হৃদরোগ-বান্ধব চর্বি থাকে, বিশেষ করে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহ কমায় এবং হৃদরোগের উন্নতি করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামও প্রচুর থাকে, যা রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, হৃদরোগের জটিলতার ঝুঁকি কমায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল করে দিতে পারে, যা সংক্রমণের জন্য সংবেদনশীল করে তোলে। কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে, যা একটি অপরিহার্য খনিজ এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্ষত রাখতে সহায়তা করে। খাদ্যতালিকায় এই বীজ অন্তর্ভুক্ত করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে।
৬. ঘুম বাড়ায় এবং চাপ কমায়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা চাপের কারণ হতে পারে এবং চাপ রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামার কারণ হতে পারে। কুমড়ার বীজ ট্রিপটোফ্যানের উৎস, এটি একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা শরীরকে সেরোটোনিন তৈরিতে সহায়তা করে, যা বিশ্রাম এবং সঠিক ঘুমে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখা এবং সাধারণ স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সঠিক বিশ্রাম অপরিহার্য।
আইএ