জ্ঞানবাপি মামলায় মুসলমানদের আবেদন খারিজ আদালতে

জ্ঞানবাপি মামলায় মুসলমানদের আবেদন খারিজ আদালতে

ভারতের উত্তর প্রদেশের জ্ঞানবাপি মসজিদটি মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল অভিযোগ করে মসজিদটির চত্বরে পুজো করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল হিন্দু পক্ষ।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই আবেদনের বিরুদ্ধে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি। মোট পাঁচটি আবেদন জমা পড়ে হাইকোর্টে।

অবশেষে, সব কয়টি আবেদনই শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলাটির শুনানি শেষ করার জন্য বারানসি আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে ওই উচ্চ আদালত।

এর আগে জ্ঞানবাপি মসজিদ কমিটির তরফে পাঁচ হিন্দু নারী ২০২১ সালের পূজা-অর্চনার আর্জি খারিজ করার জন্য বারানসি জেলা আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল।

মসজিদ কমিটির আইনজীবী অভয় নাথ বারানসি জেলা আদালতকে জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন এবং ১৯৯৫ সালের সেন্ট্রাল ওয়াকফ আইন অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না।

অন্য দিকে, হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন এবং হরিশঙ্কর জৈনের যুক্তি ছিল, ১৯৯১ সালের ওই আইন জ্ঞানবাপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তারা জানান, ১৯৪৭ সালের পরেও শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পূজা-অর্চনার প্রমাণ রয়েছে।

বারানসি আদালতের বিচারক অজয় কুমার বিশ্বাস মুসলিম পক্ষের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী ধর্মস্থানের চরিত্র বদল করা যায় না। কিন্তু, ওই আইনে কোথাও বলা নেই, ধর্মস্থানের প্রকৃত চরিত্র নির্ধারণ করা যাবে না।’

২০২১ সালের আগস্টে পাঁচ হিন্দু নারী জ্ঞানবাপির ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেব-দেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে পূজা-অর্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে মসজিদের অন্দরের ভিডিও সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারানসির নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর।

এরপরেই হিন্দু পক্ষের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত নমুনাগুলোর কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর।

প্রসঙ্গত, গত সোমবারই মুখবন্ধ খামে বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র রিপোর্ট পেশ করে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)।

ওই মামলার সরকারি আইনজীবী অমিত শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এএসআই-এর তরফে বারানসি জেলা আদালতের বিচারক অজয় কুমার বিশ্বাসের কাছে ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে কয়েক দফা রিপোর্ট পেশের সময়সীমা পেরনোর পরে আদালতের অনুমতিক্রমে বাড়তি সময় নিয়েছিল এএসআই। মুখবন্ধ খামে পেশ করা রিপোর্টে কী রয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানানো হয়নি এএসআই-এর পক্ষ থেকে।

Explore More Districts