চাঁদপুর জেলার ২শ ৪৯ টি মাধ্যমিক স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা কাল বুধবার এক যুগে শুরু হচ্ছে। সারাদেশের শিক্ষা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ তারিখে একই সময়ে ও দিনে মাধ্যমিক স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাগুলো শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। ৬ষ্ঠ -থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত জেলায় মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা – (১০ শ্রেণি ব্যতীত) ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪শ ৬ জন।
স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ স্কুল কর্তৃক প্রশ্নপত্র তৈরি করবে। চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। জেলায় মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা -২ শ ৪৯ টি। এর মধ্যে সরকারি ১০ টি এবং বেসরকারি ২ শ ৩৯ টি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে এ তথ্য জানা গেছে। জেলার সকল স্কুলের নির্বাচনি পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর শুরু হবে। ১২ দিন পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। শেষ হবে ১১ ডিসেম্বর ২০২৫।
প্রাপ্ত তথ্য মতে ,চাঁদপুর সদরে -৩৫ হাজার ৫শ জন ,হাজীগঞ্জের সংখ্যা-২৭ হাজার ৭শ ১৫ জন , শাহারাস্তির ১৮ হাজার ২শ, কচুয়ার ২১ হাজার ৩শ ,মতলব উত্তরের ২১ হাজার ৪শ ৪৬ জন, মতলব দক্ষিণের ১৫ হাজার ৩শ ,ফরিদগঞ্জের ২৭ হাজার ৪শ এবং হাইমচরের ৭ হাজার ৫শ ৫০ ছাত্র-ছাত্রী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্যও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু করা হচ্ছে। চলতি বছরের শেষদিকে এ বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৫ % শিক্ষার্থীর আসন্ন জুনিয়ার বৃত্তি পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক ২০২৪ সালের বই বিতরণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী হাজীগঞ্জের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৪শ ১০ জন এবং শাহরাস্তির ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার ৫শ জন। সে মতে-হাজীগঞ্জ ও শাহারাস্তির সম্ভাব্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৫শ জন । এর মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৩৫ স্কুলের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৩শ ৫জন এবং শাহারাস্তির ৩৯ স্কুলের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ১ শ ২৫ জন ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব বলেন, অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা ফের চালু করতে ২০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেগম বদরুন নাহার। ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা পুনঃপ্রবর্তন নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। জানা গেছে, সবশেষ ২০০৯ সালে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা নিয়েছিল সরকার। এরপরে অষ্টম শ্রেণিতে চালু করা হয়েছিল জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা। সমালোচনার মুখে ২০২৩ সালে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নিয়ে একই সিলেবাসের আদলে অষ্টম শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষার নেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত বছরও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা হয়নি। নেয়া হয়নি বৃত্তি পরীক্ষাও। এবার এ বছর থেকে দীর্ঘসময় পর অষ্টম শ্রেণিতে ফের চালু হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া নির্দিষ্ট শতাংশের ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হতো।
বর্তমানে বৃত্তি পরীক্ষার নতুন নীতিমালা এখনো না থাকায় কত শতাংশ শিক্ষার্থীকে এ পরীক্ষায় বসতে পারবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাই করার জন্য এটি পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে – ৪ শ টাকা। পরীক্ষার সময়সূচি : ২০২৫ সালের জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার সময়সূচি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার ২৪ সেপেটম্বর অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। ২১ ডিসেম্বর বাংলা, ২২ ডিসেম্বর ইংরেজি, ২৩ ডিসেম্বর গণিত, ২৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আজাদ খান এবং সদস্য সচিব ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
বিশেষ নির্দেশাবলি: পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন নিতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে হবে। বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের জন্য এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট তিন ঘণ্টা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে সাত দিন আগে সংগ্রহ করবে। পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি/পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইলফোনসহ অন্য কোন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সঙ্গে আনতে পারবেন না। এদিকে সরকারি প্রাথমিক স্কুল গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা ১ ডিসেম্বর শুরু হবে।
আবদুল গনি ,
১৮ নভেম্বর ২০২৫
এজি

