নিজস্ব সংবাদদাতা : দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জামালপুর শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের উদ্যােগে শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দিরের ৩২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর রাতে শহরের দয়াময়ী মন্দিরের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার সিংহ চপলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন (শিক্ষা ও আইসিটি) এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন-রশিদ। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহরাব হোসাইন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কৃষিবিদ লক্ষীকান্ত পন্ডিত, জামালপুর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সোম প্রমুখ। উল্লেখ, উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীগনের অন্যতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দির বাংলা ১১০৪ সালে পরগণা জাফরশাহী ও ময়মনসিংহের জায়গীরদার তৎকালীন বাংলার নবাব মূর্শিদকুলী খানের ঘনিষ্ঠজন শ্রীকৃষ্ণরায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন। তার পুত্রবধূ নারায়ণী চৌধুরাণী বাংলার গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস-এর সময় মন্দিরের ব্যয় নির্বাহের জন্য “শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী দেবোত্তর এস্টেট” প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের পরবর্তী বংশধর রাম গোপালপুরের জমিদার যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী মন্দিরের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দিরে শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার বিগ্রহ ছাড়াও শ্রী শ্রী রীঁ অন্নপূর্ণা মাতার বিগ্রহ ও শ্রী শ্রী শিব বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছে। স্বাধীনতাপূর্বে শ্রী শ্রী রীঁ দশভুজা মায়ের বিগ্রহ ও মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত ছিল। প্রতিদিন জাগরণ, ভোগ, বলি, যজ্ঞা ও সন্ধ্যা আরতীর মাধ্যমে পূর্জাচ্চনা করা হয়। এছাড়া প্রতি অমাবস্যায় শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার পূর্ণিমায় শ্রী শ্রী রীঁ অনুপূর্না মাতার ও চতুদর্শীতে শ্রী শ্রী শিব বিগ্রহের বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঋতু ভিত্তিক উৎপাদিত সবজি মায়ের নিকট ভোগ দেওয়া হয়।
আলোচনা সভা শেষে ২ শতাধিক সকল ধর্মাবলম্বী মহিলাদের মাঝে বস্ত্রদান করা হয় এবং বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ৩১জন শিক্ষার্থীদের মাঝে এককালীন বৃত্তির নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এছাড়াও কবিতা আবৃত্তি, সাধারণ জ্ঞান, ঢাক বাজানো, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও প্রদীপ প্রজ্বলন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদসহ সকল মন্দিরের নেতৃবৃন্দ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।
