নিজস্ব সংবাদদাতা : একজন প্রকৃত শিক্ষক ইতিবাচক বদলে দিতে একটি বিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র। স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করে নান্দনিক ও শৈল্পিক আবহ তৈরি করতে পারে একজন সৃষ্টিশীল শিক্ষক। ঝরে পড়া রোধ এবং বিদ্যালয়মূখী করতে পারে শিক্ষকের দক্ষতা এবং মানবিক ও আচরণগত গুনাবলীর মাধ্যমে। এসবের প্রকৃষ্ট উদাহরণ তৈরি করেছে জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাসিল গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আসাদ। তার সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে সহকারী শিক্ষকগণ, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি, এলাকার সূধী সমাজ, অভিভাবক, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং উন্নয়ন সংঘের সিডস কর্মসূচি।
১৯ নভেম্বর বুধবার এ বিদ্যালয়ে এক শিখন কার্যক্রম শিখন বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট, ধোবউড়া ও ফুলপুর উপজেলার সিডস কর্মসূচির চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন সংঘ- সিডস প্রকল্পের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন ওই তিন উপজেলার ২৫ জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির সিডস কর্মসূচির ১১ জন কর্মী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম। হাসিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলায়ের প্রধান শিক্ষক আলী আসাদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাফিউন নুর, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও সিডস কর্মসূচির ফোকাল পার্সন জাহাঙ্গীর সেলিম, কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এস. এ. শামসুদ্দিন, স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির ব্যবস্থাপক কর্নেলিউস দালবৎ প্রমুখ । মুক্ত আলোচনা এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্যমূলক বক্তব্য রাখেনে ময়মনসিংহ থেকে শিখন বিনিময় কার্যক্রমে আসা প্রতিনিধিরা।
হাসিল গৌরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের কার্যক্রমের মধ্যে এসেম্বলি ও বিভিন্ন কসরত প্রদর্শন, কাব স্কাউট দলের কার্যক্রম পরিচালনা, খুদে ডাক্তার কার্যক্রম, স্টুডেন্ট কাউন্সিল কার্যক্রম,সততা স্টোর, মিনি পাঠাগার, হাইজিন ও স্যানিটেশন সংক্রান্ত প্রদর্শন ও চর্চা, শিখন কক্ষের পরিবেশ, বার্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিকল্পনা, বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বাগান তৈরি, প্রাক-প্রাথমিক কার্যক্রম, পিটিএ ও এসএমসি কার্যক্রম এবং সিডস কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য চাইল্ড ক্লাব কার্যক্রম।
এ ধরনের শিখন সহভাগিতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ফলে শিখনে আসা শিক্ষকরা আরও সমৃদ্ধ হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম উপস্থিত বক্তাদের আলোচনা ও দাবির প্রেক্ষিতে বলেন এ বিদ্যালয়টিকে এ গ্রেডে উন্নীত করার পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মান, সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হবে। তিনি প্রধান শিক্ষকের প্রশংসা করে বলেন আলী আসাদ সাহেবের নেতৃত্বে বিদ্যালয়টির আমুল পরিবর্তন হয়েছে। ৭৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করে চলতি বছর ১৪১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। শিক্ষার্থী হাজিরার হার শতকরা ৯০ ভাগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্থানীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটিকে আদর্শ ও আলোকিত করে তুলেছেন।
