ছদ্মবেশে বাউল সেলিম নামে ঘুরছিলেন সিরিয়াল কিলার হেলাল | Narailkantho-Latest Bangla News & Entertainment…

ছদ্মবেশে বাউল সেলিম নামে ঘুরছিলেন সিরিয়াল কিলার হেলাল | Narailkantho-Latest Bangla News & Entertainment…

ছদ্মবেশে বাউল সেলিম নামে ঘুরছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সিরিয়াল কিলার হেলাল। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারের পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির পরিচয় দিল র‍্যাব। সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র‍্যাব।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, সেলিম নামে গানের মডেলিং করে পরিচিতি পান উত্তরবঙ্গের ভয়ংকর খুনি হেলাল। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নারী নির্যাতনের মামলা।

একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পর ছদ্মবেশে চলাফেরা শুরু করেন হেলাল। বিয়ে করে চার বছর ধরে থাকছিলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায়। সেখানে বাউল শিল্পী সেলিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন হেলাল।

র‍্যাব জানিয়েছে, আনুমানিক ছয় মাস আগে এক ব্যক্তি ইউটিউবে প্রচারিত একটি গানের বাউল মডেল সম্পর্কে র‌্যাবকে তথ্য দেয় যে, সে সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব ওই ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে র‌্যাব নিশ্চিত হয়। এরপর র‌্যাব ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব ৩ এর অভিযানে গতকাল বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মো. হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকিরকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের অপরাধ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, সেলিম ফকির জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে ২০০১ সালে বগুড়ার চাঞ্চল্যকর বিদুৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি। সে আরো দুটি হত্যা মামলার আসামি। ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলার আসামি বলে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।

এছাড়াও ২০০৬ সালে বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রবিউল নামের এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তেরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেপ্তার করা হেলাল ওই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এছাড়া ২০১১ সালে হেলালের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে।

র‍্যাব আরো জানায়, হেলাল এলাকায় মুদি দোকানদারি করতেন। পরবর্তীকালে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে এলাকায় তাঁর কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১০ সালে করা চুরির মামলায় ২০১৫ সালে জামিনপ্রাপ্তির দিনে বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি সুকৌশলে এলাকা ত্যাগ করে ফেরারি জীবনযাপন শুরু করেন।

এরপর চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেটের শাহজালাল মাজারে চলে যান হেলাল। সিলেটে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে আরো কিছুদিন অবস্থান করেন।

জানা যায় যে, বিভিন্ন সময়ে হেলাল বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থান করতেন। তিনি কিশোরগঞ্জ ভৈরব রেলস্টেশনে পরিচয় গোপন রেখে সেলিম ফকির নাম ধারণ করেন।

আনুমানিক পাঁচ বছর আগে হেলাল ওরফে সেলিম ফকির নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে গামছা পলাশের একটি গানের শুটিং চলাকালে রেললাইনের পাশে বাউল গান গাইছিলেন। তখন শুটিংয়ের একজন তাঁকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলে ‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’ শিরোনামের জনপ্রিয় গানের বাউল মডেল হিসেবে সেলিম ফকিরকে দেখা যায়।

সেলিম ফকিরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।


Explore More Districts