চৌদ্দ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মসজিদে হস্তান্তরের আগেই ফাঁটল

চৌদ্দ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মসজিদে হস্তান্তরের আগেই ফাঁটল





সৈয়দ সালিক আহমেদ ॥ চুনারুঘাট উপজেলায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মডেল মসজিদ হস্তান্তরের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে টাইলস ও দেওয়ালের বিভিন্ন অংশে।
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মার্বেল পাথরে একটু ফাটল দেখা যায় বলে সরকারের গণপূর্ত বিভাগ জানালেও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বলছে, দেওয়ালসহ মসজিদের বিভন্ন অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় তাঁরা সেটি গ্রহণ করবে না।
এনিয়ে দুই দপ্তরের মাঝে ৭ মাস ধরে চলছে চিঠি চালাচালি। অপরদিকে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলায় প্রথম মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয় চুনারুঘাট উপজেলায়। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ১০তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের প্রায় ৭ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত মসজিদে কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি । এতে করে মূল্যবান অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, মসজিদের মেঝের বেশিরভাগ টাইলসে ফাটল দেখা দিয়েছে। জানালার গ্লাস ভাঙ্গা, দেওয়ালে ফাটল। মসজিদের ভিতরে বেশ কিছু চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র এলোমেলোভাবে অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে। বিদ্যুতের লাইট জ¦লছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরব আলী জানান, মসজিদ উদ্বোধন হয়েছে অনেক আগে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এত সুন্দর একটি মসজিদ উপহার দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত একদিনও নামাজ পড়তে পারলাম না।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, নামাজ যদি না পড়তে পারলাম তাহলে এই মসজিদ আমাদের কি কাজে আসবে ?
৭৫ বছর বয়স্ক জলিল মিয়া বলেন, মাঝেমধ্যে দেখা যায়, লোকজন এসে ছবি তুলে যায়। শুনেছি কয়েক কোটি দিয়ে এই মসজিদ বানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দরজা জানালা পর্যন্ত খোলা হয় নাই। মসজিদের চারপাশের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে, জানালার গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। একটা মসজিদ এতদিন থেকে বন্ধ অবস্থায় আছে। পাঁচ ওয়াক্ত আজান হলে নামাজ পড়তে পারতাম।
হবিগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, উদ্বোধনের পরপরই টাইলসসহ মসজিদের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেওয়ার কারণে আমরা গ্রহণ করছি না। মসজিদের ভিতরে আমরা প্রায় ৭ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরণের ফার্নিচার দিয়েছি, এগুলো ব্যবহার না করার কারণে এখন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা গণপূর্ত বিভাগকে কয়েক দফা চিঠি দিয়েছি, তারা এখন পর্যন্ত কোন সমাধান করে দেয়নি।
গণপূর্ত অধিদপ্তর হবিগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাঃ জাকির হোসেন জানান, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মার্বেল পাথরে একটু ফাটল দেখা দিয়েছে। এগুলো অচিরেই মেরামত করা হবে।

শেয়ার করুন




Explore More Districts