স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের ১১তম গ্রেড হইতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করনের দাবীতে চাঁদপুরে ৪ ঘন্টা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে চলে এ ৪ ঘন্টা ব্যাপী কর্মবিরতি। আর তাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তিতে। যথা সময়ে ডাক্তারদেরকে পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে না পেরে তাদের বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে। প্যাথলজি ও ঔষধ কাউন্টারের সামনে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
এমনি ভাবে যদি চাঁদপুরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ গ্রেডে উন্নতিকরণের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে তাহলে স্বাস্থ সেবা অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মুমূর্ষ রোগীর লোকজন তাদের রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বসে থাকতে দেখা যায়।
বেশ কিছু রোগীর লোকজন জানায়, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে দেখছি টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের আন্দোলন চলছে। আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে পারছিনা। আবার যখন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর রিপোর্ট আসবে তখন চিকিৎসক থাকবে না, এখন আমাদের চরম ভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
আন্দোলনকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ। স্বাস্থ্যসেবায় রোগ নির্ণয় ও ঔষুধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ সেবাদান কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত। স্বাস্থ্যসেবা একটি “টিম ওয়ার্ক” যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। যেকোন মহামারী যেমন- করোনা, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ইত্যাদিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ রোগ নির্ণয় ও ঔষুধ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। রোগীদের সেবাদানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো যেমন এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, নমুনা সংগ্রহ, প্যাথলজিকাল পরীক্ষা, ক্যান্সার চিকিৎসায় রোগীদের রেডিওথেরাপী, ফিজিওথেরাপী, ডেন্টাল রোগ নির্ণয়ে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টগণ।
তারা আরোও বলেন, ফার্মাসিস্টগণ মেডিসিন স্টোরের দায়িত্ব, ঔষধের চাহিদাপত্র প্রস্তুতকরণ, সংরক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রণ, বিতরনসহ ইত্যাদি দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। এ পেশায় বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ পেশায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বরং অবহেলিত রয়েছে বছরের পর বছর। অন্যান্য ডিপ্লোমা কোর্সধারীর মধ্যে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ডিপ্লোমা নার্স এবং ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা ইতোমধ্যেই ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেছে। অথচ, সমশিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও অতীব পরিতাপের বিষয় ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণী) দাবীটি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। দাবীসমূহ বাস্তবায়ন না হলে লাগাতার কমপ্লিট শাট-ডাউন পালিত হবে জানান নেতৃবৃন্দ।
এসময় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক: মাজহারুল ইসলাম অনিক/
৪ ডিসেম্বর ২০২৫


