চাঁদপুরে ৮ লাখ ৫ হাজার শিশু-কিশোরদের টাইফয়েট প্রতিরোধ টিকা দেয়ার টার্গেট

চাঁদপুরে ৮ লাখ ৫ হাজার শিশু-কিশোরদের টাইফয়েট প্রতিরোধ টিকা দেয়ার টার্গেট

দেশে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে ১২ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপি টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ শুরু হতে যাচ্ছে। সরকারের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৫ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে নিরাপদ টাইফয়েড টিকা দেয়া হবে। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি চলবে। চাঁদপুরে ৮ লাখ ৫ হাজার ২শ ৪৫ জন শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়ার টার্গেট রয়েছে। এ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে। পাশাপাশি থানা,উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চাঁদপুরের ৮ উপজেলা ও পৌরসভায় ৮ লাখ ৫ হাজার ২শ ৪৫ জন ৯ মাস থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়ার টার্গেট নিয়ে চাঁ^দপুর জেলার স্বাস্থ্যবিভাগ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে-সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ঠ শাখা থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর এ তথ্য জানা গেছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুরের সকল সুধীজন,শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা,সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব, সমাজসেবক ও স্বাস্থ্যবিভাগী দের সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে- চাঁদপুর সদরে ১ লাখ ২ হাজার ২শ ৪৩ জন,চাঁদপুর পৌরসভায় ৬০ হাজার ১শ ৪৫ জন, ফরিদগঞ্জে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭শ ৯১ জন,হাইমচরে ৩৫ হাজার ৪শ ২৮ জন,হাজীগঞ্জে ৮৩ হাজার ৭শ ৯৪ জন, হাজীগঞ্জ পৌরসভায় ৩১ হাজার ১৬ জন,কচুয়ায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৮শ জন,শাহরাস্তিতে ৮৫ হাজার ৮শ ৪৪ জন,মতলব উত্তরে ৮৮ হাজার ৪শ ৫৭ জন এবং মতলব দক্ষিণে ৬০ হাজার ৫শ ৬৭ জন শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়ার টার্গেট রয়েছে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে ১২ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপি টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি।

চাঁদপুর জেলার ১ হাজার ৭শ বর্গ কি.মি আয়তনের ৮ উপজেলায় ৮৯টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৩শ ৬৫টি গ্রামে ৪৯টি ২ শ ৯৩টি মাধ্যমিক, ২শ ৬০টি মাদ্রাসা, ১ হাজার ১শ ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক স্কুল ও ৬শ ১০টি কিন্ডার গার্টেন এবং ৪শ ৫০টি এবতাদেয়ী মাদ্রাসা রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ স্কুলে টিকা গ্রহণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা নিকটস্থ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবে।

কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলার পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মী,স্কাউট,গার্লস গাই্ড, রেডক্রিসেন্ট সদস্যগণসহ স্ব-স্ব এলাকার রাজনৈতিক কর্মীগণ দায়িত্ব পালন করবে। এদিকে জেলার চরাঞ্চল এলাকা রয়েছে- মতলবে ৪টি, হাইমচরে ৭২টি এবং সদরে ৩৬টি। এগুলোকে স্বাস্থ্যবিভাগের ভাষায়-‘হার্ড-টু-রিচ এরিয়া’বলা হয় বা রিমোট এরিয়া । এ সব এলাকায় বিশেষভাবে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকা প্রদানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে-চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,ইপিআই কেন্দ্র ও ওয়ার্ডভিত্তিক কমিনিটিগুলোকে ‘ টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে টিকা দান কেন্দ্র ’ বিবেচনা করা হচ্ছে।

দেশব্যাপি উপজেলা ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করবেন। সহকারী উপজেলা ও থানা অফিসাররা স্কুল পর্যায়ে কার্যক্রমের তদারকি করবেন বলে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। জেলা,উপজেলা ও থানার কর্মকর্তারা দৈবচয়নের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রধানশিক্ষকরা শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের সম্পৃক্তকরণ নিশ্চিত করবেন। শিক্ষকরা রেজিস্ট্রেশন, টিকা গ্রহণ নিশ্চিতকরণ, রোভার স্কাউট নিয়োগ এবং অভিভাবক উদ্বুদ্ধকরণে দায়িত্ব পালন করবেন। রেজিস্ট্রেশন ফরমের তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা হবে। কার্যক্রমে সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী পরিচালক মো.খালেদ সাইফুল্লাহ। এ মাসব্যাপি কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করা হচ্ছে।

টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে আসন্ন ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫’ সফলভাবে সম্পন্ন করতে কার্যক্রম গ্রহণ; টাইফয়েড টিকা গ্রহণের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি, প্রচার প্রচারণা এবং লজিস্টিক সহায়তা প্রদান ; টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা,টিকা পরিবহন ও টিকাদান কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ;প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমানের সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্হিভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুদের ১ ডোজ টাইফয়েড টিকা গ্রহণে শিক্ষক-শিক্ষিকা,অভিভাবকবৃন্দ এবং জনগণকে উদ্ধধুকরণ;কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তা বা বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে কমিটিতে কো-অপ্ট করে সফল করতে বলা হয়েছে। ১২ অক্টোবর হতে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ দিনব্যাপি সারাদেশে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে শিশুদের টাইফয়েড সংক্রমণজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুহার হ্রাসকল্পে প্রায় ৫ কোটি শিশুর প্রত্যেককে ১ ডোজ টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে।

এ টিকাদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিদ্যমান ইপিআই স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এ জি

Explore More Districts