চাঁদপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে উঠছে ১শ’ টাকার ভাতের হোটেল

চাঁদপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে উঠছে ১শ’ টাকার ভাতের হোটেল

চাঁদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ১শত টাকায় আনলিমিটেড ভাত, আলু, ঝোল আর একপিছ গরুর মাংসের খাবারের হোটেল। নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের হওয়া সত্বেও এসব ভাইরাল হওয়া ভাতের হোটেলে ভিড় করছে উৎসুক কিছু জনতা, দুপুরের পর থেকেই মূলত এসব ভাতের হোটেলে ভিড় বাড়তে থাকে। আগে ১শত টাকার দিয়ে নিজ হাতে ভাত নেওয়ার পর ব্যবসায়ীর ইচ্ছেমত মাংস ঝোল আলু পরিবেশন করে। এখানে ভোক্তাদের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ থাকেনা।

এসব খাবার হোটেলে এখন আবার নতুন পদ্ধতিতে আনলিমিটেড আলু বদলে আলু ডাউলের মত করে মাংসের সাথে মিস করে রান্না করেন, খাবারের সময় আলুর তখন অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না। অনিয়ম আর নিজেদের খামখেয়ালির মত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করা হয় এসব খাবারের হোটেলের খাবার।

ভোক্তা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্সবিহীন ভাবে গড়ে উঠেছে এসব খাবারের হোটেল, দেশে ভাইরাল মিজান সর্বপ্রথম ১শত টাকায় আনলিমিটেড খাবারের ব্যবস্থা চালু করেন, তারপর তাকে অনুসরণ করে চাঁদপুরে একের পর এক ঘরে উঠছে ১শত টাকার আনলিমিটেড খাবারের ভাতের হোটেল। বাহারি বিজ্ঞাপন আর মাইকিং করে ১শত টাকায় আনলিমিটেড খাবারের জলকানি থাকলেও মূলত খেতে গেলে এর আসল রহস্য বোঝা যায়, নিম্নমানের খাবারের মান, অস্বাস্থ্যকর ও অরোচিকর এসব খাবারের হোটেলে কিছু ইউটিউব ব্যবসায়ী, ব্লগার, ফেসবুক পেইজের স্বত্বাধিকারী গিয়ে তাদের পেইজের ভিউ বাড়ানোর জন্য কিছু মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভোক্তাদের আকর্ষণ বাড়ায়। যার কারনে ভোক্তাগণ চরমভাবে প্রতারিত হয়ে আসছেন, এসব খাবার হোটেলগুলোতে দ্রুত ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান পরিচালনা করা না হলে দূর দুরন্ত থেকে ছুটে আসা উৎসক ভোক্তাগণ প্রতারণার শিকার দিন দিন বাড়তে থাকবে।

চাঁদপুরের বড় বড় রেস্তোরাঁর মালিকগণ ভোক্তা সাধারণের জন্য সুস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশন করার পরও বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা গুনতে হয় তাদের। আর এসব খোলামেলা পরিবেশে খাবার হোটেল গুলো কতটুকু স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা হয়, এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। এ দিকে এভাবে আনাচে-কানাচে খাবার হোটেল গড়ে উঠলে একদিকে সরকার হারাবে রাজস্ব, অন্যদিকে ভোক্তাগণ হবে প্রতারিত।

সারাদিনের পরিশ্রম শেষে দুপুরে যখন খাবার খেতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, সে খাবার যদি সুস্বাদু না হয় অরুচি পূর্ণ হয়, তাহলে বাহারি বিজ্ঞাপন দিয়ে ভোক্তাদের সাথে চরম ভাবে প্রতারণা করা হয় বলে এসব খেতে যাওয়া ভাতের হোটেলের ভেক্তাগণ জানিয়েছেন।

এভাবে একের পর এক ১শত টাকায় আনলিমিটেড খাবারের হোটেল গড়ে উঠলে সরকারের বিভিন্ন ট্যাক্স দিয়ে গড়ে ওঠা বড় বড় হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকরা হোটেল ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর—দুটি বিষয় বজায় রেখেই খাওয়াকে উপভোগ্য করে তোলা না হলে সে খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে ভোক্তাগন জানান, জনপ্রিয়তা তখনি পাবে যখন ভেক্তাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন নিশ্চিত হবে। সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমের আকর্ষণ না বাড়িয়ে খাবারের গুণগত মানের দিকে নজর দেওয়ার জন্য এসব গড়ে ওঠা খাবার হোটেল গুলোর মালিকদেরকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে একশত টাকার মধ্যে যে সকল খাবারের হোটেল বা রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে সেসকল প্রতিষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চাঁদপুরের মনিটরিং চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি হোটেলকে খাবারের মান ও পরিবেশন বিষয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর বা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন কোন পরিবেশে খাবার দ্রব্য তৈরি বা পরিবেশন বা নিম্নমানের খাবার দ্রব্য বিক্রয় ক্রয় করা হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিবেদক: সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী,
১৬ নভেম্বর ২০২৫

Explore More Districts