চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা মূল্যবান যন্ত্রপাতি খালাসে স্টোর রেন্ট ফাঁকি দিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে প্রতারণা চক্রের মূলহোতা তৌহিদুল ইসলাম শুভকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার সোবহানবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তৌহিদুল ইসলাম রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার পশ্চিম উজানচরের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। তিনি নিজেকে সামরিক বাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।
গ্রেপ্তারকালে তার কাছ থেকে সামরিক পোষাকসহ মেজর পদে ভুয়া পরিচয়পত্র, একাধিক ভিজিটিং কার্ড, ৮টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা স্থাপনের জন্য বিশেষ সুবিধায় আনা প্রায় ১৩৯টি কন্টেইনার যথাসময়ে খালাস না হওয়ায় বন্দরের কাছে তাদের ৯২ কোটি টাকার স্টোর রেন্ট বকেয়া পড়ে।
পরে স্টোর রেন্ট মওকুফ চেয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকাকালে বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার ফয়েজুর রহমান প্রতারণা চক্রের সদস্য আবু হানিফা ওরফে হানাফি ওরফে আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিনের (৩৩) কাছ থেকে একটি ভুয়া স্টোর রেন্ট মওকুফ পত্র পান এবং তা দিয়ে যন্ত্রপাতি খালাসের চেষ্টা করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে যাচাইয়ের জন্য পত্রটি পাঠালে সেটি জাল বলে নিশ্চিত করে মন্ত্রণালয়। এরপর বন্দরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) মামলা করা হয়। মামলার তদন্তভার পরে সিআইডিকে দেওয়া হয়।
সিআইডি’র সাইবার পুলিশ সেন্টারের সহায়তায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা তৌহিদুল ইসলাম শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তার তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ২টি ও রাজশাহীর আরএমপি বোয়ালিয়া থানায় প্রতারণার আরও ২টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ীতে একটি সাজা পরোয়ানাসহ মোট ৪টি পরোয়ানা ঝুলছে।
এ ঘটনায় এর আগেও চক্রের সদস্য ফয়েজুর রহমান (৪২), আবু হানিফা ওরফে হানাফি (৩৩), আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিন (৪১) ও রনি রাজ হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে হানিফা ও আমিন আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
চক্রের আরেক সদস্য আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৬টি এবং রনি রাজ হোসেনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও প্রতারণার ২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে, মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর ইউনিটের তত্ত্বাবধানে তদন্তাধীন। প্রতারক চক্রের বাকি সদস্যদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এমএইচএস/সিটিজিনিউজ