মামাবাড়ি বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রী মিমি পুকুরে গোসল করে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু তার আর স্কুলে যাওয়া হলো না। তার আগেই পুকুরে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির ফার্স্ট গার্ল এই ছাত্রীটি। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মহাজন বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম সম্পূর্ণা সাহা মিমি (৯)। সে পার্শ্ববর্তী চার নম্বর ওয়ার্ড সুশীল ডাক্তার বাড়ির গার্মেন্টসকর্মী লিটন সাহার মেয়ে। তার মা সুমি সাহাও স্কুল শিক্ষক। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে রাঙ্গুনিয়ায় পুকুরে ডুবে ৫ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
নিহত শিশুর চাচা সৌরভ সাহা জানান, কয়েকদিন আগে মায়ের সাথে সে মামার বাড়ি বেড়াতে যায়। স্কুল শিক্ষিকা মায়ের সাথে সে প্রতিদিন স্কুলে আসা–যাওয়া করত। তবে বুধবার তার মা আগে স্কুলে চলে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে মিমি পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল। সে পুকুর পাড়ে বসে মগের সাহায্যে গোসল করে। সম্ভবত সে গোসলে নেমে সবার অগোচরে পা পিছলে পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেনি। পরে পাশ দিয়ে যাওয়া টিংকু সাহা নামে এক পথচারী তার নিথর দেহ ভেসে থাকতে দেখেন। সবাই তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে মিমি ছিল ছোট।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক টিটু সেন বলেন, মিমি আমাদের স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ফার্স্ট গার্ল ছিল। নাচে–গানে পারদর্শী। প্রতিটি অনুষ্ঠানে সবার আগে থাকত। এমন মেধাবী আর প্রাণবন্ত মেয়ে হঠাৎ এভাবে চলে যাবে বিশ্বাসই হয় না। সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের চিকিৎসক ইসমাইল হুসাইন জানান, হাসপাতালে আনার পর পরীক্ষা করে দেখা গেছে সে মারা গেছে।
উল্লেখ্য গত রোববার উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকায় মো. ইয়াছিন (১২), ২৪ অক্টোবর উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের উত্তর পারুয়ার দক্ষিণ পাড়া গ্রামে সুমাইয়া আক্তার (১১), রুবিনা পারভীন হাবিবা (৭) ও জান্নাত আক্তার (১০) নামে একসাথে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল মারা গেল মিমি। এ নিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় এক সপ্তাহে পুকুরে ডুবে ৫ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
ডা. ইসমাইল হুসাইন বলেন, এমন অপমৃত্যু কখনো কাম্য নয়। শিশুকে সাঁতার শেখানো ও অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।


