সিলেটের গোলাপগঞ্জে সরকারি কৃষিজমি দখল করে অবৈধভাবে ফিশারি খনন এবং প্রশাসনের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় চারজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযান স্থানীয়ভাবে টক অব দ্য টাউন হয়ে উঠেছে।
গত বুধবার (২৭ আগস্ট) ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী পূর্বপাড়া বদলখা গ্রামে এ অভিযান পরিচালিত হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—চেরাগ আলী (৬২), ইছাক আলী (৬০), সুপার আহমদ (৫০) ও রুহেলা বেগম (৪৫)।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি কৃষিজমি দখল করে গভীর গর্ত খনন করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছিলেন তারা। বিষয়টি জানতে পেরে ভূমি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয় এবং সরকারি ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
পরে এসি ল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালত চেরাগ আলীকে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর ১১ ধারায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা দেন। অপরদিকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ইছাক আলী, সুপার আহমদ ও রুহেলা বেগমকে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ১৮৬ ধারায় এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযানে সেনাবাহিনীর টহল দল ও গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করে।
এসি ল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ বলেন, “সরকারি জমি দখল ও প্রশাসনের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারি সম্পদ রক্ষায় আইন ভঙ্গকারীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এ অভিযানের পর এলাকাজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে প্রশংসা ঝরে পড়ে এসি ল্যান্ডের কঠোর পদক্ষেপের। স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখল করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালানো হলেও প্রশাসনের এই দ্রুত উদ্যোগ ভবিষ্যতে দখলদারদের জন্য বড় সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।
সচেতন মহলের ভাষ্য, সরকারি জমি সুরক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ কেবল ভূমি উদ্ধারেই নয়, পরিবেশ রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।