গোলাপগঞ্জে একটি সেতুর জন্য লাখো মানুষের দুর্ভোগ

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দেওয়ানের সড়কে ‘দেওয়ানের পুল’ নামে সেতুটির জন্য দীর্ঘ ৩ বছর ধরে দুর্ভোগে রয়েছেন তিন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা উপজেলার মানুষ এই লিংক রোড দিয়ে সহজে প্রতিনিয়ত জেলা শহরে যাতায়াত করতেন। কিন্তু গত ৩ বছর ধরে সেতুর জন্য এই রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে সিলেটের তৎকালীন দেওয়ানের (রাজস্ব কর্মকর্তা) নির্দেশে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকার শ্রী চৈতন্য দেবের বাড়িমুখী সড়কটি নির্মাণ করা হয়। এ সময় লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দেওরভাগা খালের উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটিই ‘দেওয়ানের পুল’ নামে পরিচিত। ২০২২ সালে সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এ সময় নতুন সেতু নির্মাণ করার লক্ষ্যে পুরাতন সেতুটি ভাঙার কাজ শুরু হলে নতুন সেতু নির্মাণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। সেতুটি অনেকটা ভেঙে ফেলার পর স্থানীয় এলাকাবাসী ঐতিহাসিক স্থাপত্য রক্ষার জন্য দাবি তোলেন। পরবর্তীতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি টিম পরিদর্শন করে গেলেও আজো সংস্কার বা পুনর্নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তিন বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেতুটি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৩ বছর থেকে সেতুটি কারণে দু’দিকের রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি চলাচল না করার কারণে সড়কটি দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও চলাচলকারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশাচালক কবির আহমদ জানান, এই রাস্তা দিয়ে গোলাপগঞ্জ, ঢাকাদক্ষিণ, বিয়ানীবাজার, বড়লেখা ও সিলেটে যেতে পারতাম। পুলটি ভেঙে ফেলায় এখন এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সিলেট এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবির বলেন, নতুন সেতু নির্মাণের জন্য কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর থেকে পুলটি (সেতু) ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি বলে বাধা আসায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পুরো কাজের টেন্ডারও বাতিল হয়ে যায়। এখন এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এটা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দেখবে।
এদিকে সেতুটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা বা কবে হবে এর সদুত্তর দিতে পারেনি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের ফিল্ড অফিসার সাইদ ইনাম তানফিরুল বলেন, এটা প্রথমে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করা হবে। তারপর এটা কীভাবে সংস্কার করা যায়, তা বিবেচনা করা হবে।

ডিএস/এমসি