
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
এবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল হক ওরফে নুরা পাগলের বাড়ী ও দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ, চুরি, জখম, হত্যা ও কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পোড়ানোর অভিযোগে অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এরআগে সোমবার দিবাগত রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নুরা পাগলের ভক্ত নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদি হয়ে এ অভিযোগ দাযের করেন। এই মামলায় আব্দুল লতিফ ও অভি মন্ডল রঞ্জু নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে এরআগে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে পুলিশের উপর হামলা, সরকারী কাজে বাঁধা প্রদান ও সরকারী সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার জনকে আসামী করে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. সেলিম মোল্লা বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব জানান, রাতে নুরা পাগলের ভক্ত নিহত রাসেলের বাবা বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। নতুন মামলায় দুই জনসহ এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্বের পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুর মামলায় তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের অনেকেই এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, নুরাল পাগলের কবর উচু থেকে নিচু করাসহ বিভিন্নদাবিতে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুম্মার নামাজের পর ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে তৌহিদী জনতা পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচীর ডাক দেয়া হয়। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য শেষে কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে যেতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারী গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসিথর গাড়ি ভাংচুর করে। সেই সাথে ৫ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের ২জনকে পিটিয়ে ও ঢিল ছুঁড়ে আহত করে। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা করে নুরাল পাগলের বাড়ী ও দরবারের গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভবন ও দরবার শরীফ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতা নুরুল হক অরফে নুরাল পাগালের লাশ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে রাতেই ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুরাল পাগলের ভক্ত রাসেল মোল্লা (২৮) নামে এক ব্যাক্তি নিহত হয়। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের আজাদ মোল্লার ছেলে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গোয়ালন্দ পাক দরবারের বিতর্কিত পীর নুরাল হক নুরা পাগল। তার মৃত্যুর পর তার প্রতিষ্ঠিত দরবার শরীফের ভেতরে কাবা শরীফের আদলে রঙ করা মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু বেদিতে দাফন করা হয়। এরপর থেকে কবর নিচু, রঙ পরিবর্তন ও ইমাম মেহেদি দরবার শরীফ লেখা সাইনবোর্ড অপসারণের দাবি করে শুক্রবার জুম্মা বাদ বিক্ষোভের ঘোষনা দেয় জেলা ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি।
The post গোয়ালন্দে দরবারে হামলা : হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ৪ হাজার জনকে আসামী করে মামলা, গ্রেপ্তার ২ appeared first on রাজবাড়ী বার্তা.