গাজীপুরে ১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থেকে পদত্যাগ করলেন প্রধান শিক্ষক – Daily Gazipur Online

গাজীপুরে ১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থেকে পদত্যাগ করলেন প্রধান শিক্ষক – Daily Gazipur Online

ডেইলি গাজীপুর প্রতিবেদক: গাজীপুরের কালীগঞ্জে পুনসহি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পদত্যাগ করেছেন। বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকার পুনসহি উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম ইমাম রাজী টুলু।
পদত্যাগকারী প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ মুন্সী ২০২১ সাল থেকে পুনসহি উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে পুনসহি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনিয়ম, দুর্নীতি, আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে। এর আগ পর্যন্ত তাঁকে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখারও ঘোষণা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে রাত ১০টার দিকে প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রসিদ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেন। যার কোনো হিসাব তিনি বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের মধ্যে আনেননি। এ ছাড়াও তিনি ঠিকমতো ক্লাস নিতেন না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির কথা বলে ৫০০ টাকা করে নিলেও সে আইডি তিনি আর করেননি।’
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তৃষা রানী চন্দ্র বলেন, ‘আমাদের প্রধান শিক্ষক কারণে-অকারণে মেয়েদের গায়ে হাত দেন। ইনিয়ে-বিনিয়ে হাতে হাত রেখে কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিতেন।’
আরেক শিক্ষার্থী সুমনা রানী জানান, ‘আজ থেকে বছর দেড়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া উপহার ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাব আত্মসাৎ করেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিথিলা তার জন্য বরাদ্দকৃত ট্যাব চাইতে গেলে তাকে তিনি টিসি দিয়ে বের করে দেন।’
পদত্যাগকারী প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ মুন্সী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্থানীয় কিছু লোকজনের ইন্ধনে আমাকে জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। গ্রামের অসাধু একটি চক্র আমাকে এই বিদ্যালয়ে রাখতে চায় না। কারণ, আমি থাকলে তাদের অন্যায় কাজ তারা করতে পারত না।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরই জান্নাত বলেন, ‘অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমি তাকে চলে আসতে বলি। শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে পুনসহি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। যেহেতু তিনি পদত্যাগ করেছেন, সেহেতু তার ব্যাপারে আনীত অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

Explore More Districts