গাইবান্ধার তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু সিলেটের তরুণী

গাইবান্ধার তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু সিলেটের তরুণী

গাইবান্ধার তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু সিলেটের তরুণী

সিলেটের তরুণী আয়েশা। বিয়ে করতে চান গাইবান্ধার তরুণী কবিতাকে। একজন সিলেট জেলা নারী ফুটবল দলের আরেকজন গাইবান্ধার নারী ফুটবল দলের সদস্য। ঢাকায় খেলতে গিয়ে তাদের দুজনের পরিচয়। একপর্যায়ে সেটা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। পরে দুই তরুণী একে অপরকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রেমের টানে আয়েশা সিলেট থেকে চলে যান গাইবান্ধার কবিতার বাড়িতে। তার পরিবারকে দিয়ে ফেলেন বিয়ের প্রস্তাব। কিন্তু বাদ সাজেন কবিতার পরিবার। কিছুতেই এমন প্রস্তাব মানতে নারাজ তারা।

একই লিঙ্গের এই সমকামি বিয়ের প্রস্তাব মেনে না নেয়ায় অভিমানে আয়েশা ছুরি দিয়ে হাত কেটে ও কবিতা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহননের পথ বেঁছে নেয়। পরে আহত দুই তরুণীকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একই লিঙ্গের এই সমকামি বিয়ের প্রস্তাব মেনে না নেয়ায় অভিমানে আয়েশা ছুরি দিয়ে হাত কেটে ও কবিতা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহননের পথ বেঁছে নেয়। পরে আহত দুই তরুণীকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে, কয়েকদিন আগে হঠাৎ কবিতা মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করে দেন আয়েশার সঙ্গে। এতে অস্থির হয়ে উঠেন আয়েশা। পরিবারের কেউকে না জানিয়ে চলে যান গাইবান্ধায় কবিতার বাড়িতে। এরপর বিয়ের প্রস্তাব নাখোজ করায় দুই তরুণী চেষ্টা চালান আত্মহত্যার।

আয়েশা ধারালো ছুরি দিয়ে দুই হাত কেটে ফেলেন। একই সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান কবিতাও। পরে পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।এমন খবর পেয়ে সিলেট থেকে গাইবান্ধায় চলে যান আয়েশার পরিবারের সদস্যরা। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আয়েশাকে হাসপাতাল থেকে সিলেটে নেয়ার চেষ্টা করেন তার পরিবার। কিন্তু নাছোড়বান্দা আয়েশা কিছুতেই কবিতাকে ছাড়তে রাজি ছিলেন না। অনেক চেষ্টার পরেও আয়েশাকে বাসে তুলতে না পেরে তার শরীরে ঘুমের ইনজেকশন প্যুশ করে তার পরিবারের সদস্যরা। তাতেও কাজ না হলে জোরপূর্বক ধস্তাসস্তি করে তাকে গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নেয়া হয়।
এরপর আয়েশা কখনো মাটিতে শুয়ে আবার কখনো গা ছেড়ে চিৎকার করে কবিতার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে কয়েকজন মিলে আয়েশাকে বাসে তোলেন। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মেয়েটি।এ সময় এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন বাস টার্মিনালে থাকা এক ব্যক্তি। সেই ভিডিওতে চিৎকার করতে শোনা যায় আয়েশাকে। তিনি বলেন, ‘আমি কবিতাকে ভালবাসি। ওরে ছাড়া বাঁচবো না। আমি বাড়ি যাব না। আমাকে কবিতার কাছে নিয়ে যাও

এদিকে দুই তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় এক ব্যক্তি কবিতাকে এ বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। তারও একটি ভিডিও ঝড়িয়েছে ফেসবুকে। সেখানে কবিতাকে বলতে শোনা যায়, ‘ও আমার কাছে থাকতে চায়। ও আমাকে ভালবাসে। ও আমাকে বিয়ে করতে চায়। এটা নিয়ে আমার ফ্যামিলিতে অনেক ঝামেলা হচ্ছে।’

গাইবান্ধা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর হাসপাতালে দুই তরুণীকে দেখতে যাই। সেখানে দুই তরুণীকে এই ঘটনা থেকে সড়ে আসতে পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনতে চায়নি।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে একদিন চিকিৎসা নিয়ে আয়েশাকে তার পরিবার সিলেটে নিয়ে যায়। আর দুই দিন পর কবিতাকে বাড়িতে আনা হয়। এই বিষয়টা নিয়ে এলাকায় সমালোচনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।’

কবিতা গাইবান্ধা জেলা নারী ফুটবল দলের সদস্য কি না এ দলের হয়ে কোন ম্যাচ খেলেছেন কী এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, ‘হ্যা; সে ফুটবল খেলে। শুনেছি সে জেলা নারী দলে খেলে। মাঝে মাঝে সে অন্য জেলাতেও খেলতে যায়।’

তবে কবিতা গাইবান্ধা জেলা নারী ফুটবল দলের সদস্য নয় বলে জানিয়েছেন কোচ সুরুজ হক লিটন। তিনি বলেন, ‘কবিতাকে আমি চিনতে পারছি না। সে জেলা দলের হয়ে কোন ম্যাচ খেলেছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে স্কুল পর্যায়ে হয়তো বা খেলতেও পারে।’

সমকামিতার ঘটনাটি তিনি লোকমুখে জেনেছেন। এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ জাতীয় আরো খবর…

Explore More Districts