খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে শহীদ শাহ জাহানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর

খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে শহীদ শাহ জাহানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর

২৯ September ২০২৪ Sunday ৬:২৬:৩৬ PM

Print this E-mail this


ভোলা প্রতিনিধি:

খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে শহীদ শাহ জাহানের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘাতকের একটি বুলেট কেড়ে নেয় ভোলার বাসিন্দা শাহ জাহানের প্রাণ।  

গত ১৬ জুলাইয়ের ঘটনা। আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করছিলেন তিনি।  

এসময় একটি বুলেট এসে লাগে তার নাকের ডান পাশে। এতে গুরুতর আহত হন। ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই শাহ জাহান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।  

আর এভাবেই স্বামীহারা হলেন ভোলার দৌলতখানের অন্তঃসত্ত্বা ফাতেমা বেগম।  

আন্দোলনে শাহ জাহান যখন শহীদ হন তখন তার স্ত্রী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।শাহ জাহানের অনাগত সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই বাবা হারালো। হয়ত কষ্টে অনাদরে বড় হতে হবে শিশুটিকে। 

স্বামীহারা এই ফাতেমার দায়িত্ব নেবেন কে? কারণ, স্বামী মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় মেলেনি ফাতেমার।  

জানা গেছে, শহীদ শাহজাহানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জামায়াতে ইসলাম। কিন্তু সেই টাকাও পাননি ফাতেমা। টাকা তার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে এখন। 

ফাতেমা জানান, দুই বছর আগে দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নের শাহ জাহানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল তার। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী  বসবাস করতেন। স্বামী শাহজাহান ফুটপাতে পাপোস বিক্রি করতেন। তার উপার্জনে চলছিল ছোট সংসার। কিন্তু কে জানতো এভাবে শাহ জাহান শহীদ হবেন আর তিনি অনিশ্চিত এক জীবনের ঝুঁকিতে পড়বেন।  

ফাতেমা বলেন, কোনো উপায় না পেয়ে অসহায় অবস্থায় বাবার বাড়ি ভোলার দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নের ছোটধলী গ্রামে মায়ের সঙ্গে থাকছি। আমি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পেটের সন্তানের দেখভালের জন্য কোন টাকা নেই। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। চিকিৎসা তো দূরের কথা।  

অসহায় ফাতেমা আরও বলেন, এখন বেঁচে থাকার জন্য সহযোগিতা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্তত আমার পেটের সন্তানের জন্য। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো আশাবাদী আমি। এছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। 

এদিকে ফাতেমার মা কবিতা বেগম তার মেয়ের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কোনোরকম যত্ন, পুষ্টিকর খাবার, চিকিৎসা কিছুই মিলছে না মেয়ের কপালে। এরপরও মেয়ে সন্তান জন্ম দিলেও সেই নবজাতকের ভরণপোষণ কীভাবে চলবে তা  চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। 

কবিতা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সরকারের সহযোগিতা না পেলে কীভাবে দিন কাটবে আমার মেয়ের? কীভাবে সুস্থ সন্তান জন্ম দেবে সে?

এ ব্যাপারে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়তি রানী কৈড়ি বলেন, শাহ জাহানের পরিবারটি খুবই অসহায়, সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পেলে অবশ্যই তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। 

এদিকে সমাজে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই আর বেচে থাকার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন অসহায় ফাতেমা।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক



শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts