মুহাম্মদ আমানুল্লাহ আমান, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে অসহায় পরিবারের দলিলকৃত ভোগদখলীয় জমি দখলে কিছু প্রভাবশালী পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ক্ষেতলাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের ধাতালীপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মন্ডলের পুত্র মোঃ খায়রুল ইসলাম (বুদ্ধু) জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার ধাতালীপুর এম.আর.আর খতিয়ান নং -৯১, আর,এস খতিয়ান নং ৬২,১৩৯,১৪৭ এর দাগ নং ৩১৪/৬৪৫ ধানী ০. ০৯ শতক, ৩১৪/১৪০ ধানী ০.২০ শতক,৩১৪/৬৪২ ধানী ০.১১ শতক, ৩১৪/৯৪১ ধানী ০.১৫ শতক, ৩১৪/৬৪৪ ধানী ০.৩২ শতকসহ মোট ৮৭ কাত ৮১ শতক সম্পত্তি ০৫ খন্ড কোবলা দলিলমূল্যে প্রাপ্ত হয়ে ৩০/৩২ বছর যাবত ভোগদখল করে আসছে।
এমতাবস্থায় উপজেলার একই গ্রাম ধাতালীপুরের মৃত ফারাজ উদ্দীনের পুত্র ধাতালীপুর গ্রামের ১.মোঃ ফজলু (৬০), ২.মোঃ বজলু (৪০) ৩.মোঃ শারফুল (৩০), একই পিতার পুত্র বর্তমানে হোপ গ্রামের বাসিন্দা ৪.মোঃ হেলাল(৪৫) ৫.মোঃ আইনুল (৫০), ধাতালীপুর গ্রামের মৃত মছিরের পুত্র ৬. মোঃ এমদাদুল (৫৫), ৭. মোঃ সাজ্জাদুল(৪৫) এবং কৃষ্ণনগর ফকিরপাড়া গ্রামের মোঃ মোফাজ্জলের পুত্র ৮.মোঃ নজরুল ইসলাম (৫০) দলবদ্ধ হয়ে গত ২ রা সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী খায়রুল ইসলাম বুদ্ধুর ভোগদখলীয় উক্ত জমি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে জমিতে গাছ লাগায়। ভুক্তভোগী খায়রুলের পরিবার তাতে বাধা দিতে গেলে তাদের খুন জখম করবে মর্মে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
অথচ বিবাদী ইতিমধ্যে তফশীল সম্পত্তির উপরে জয়পুরহাট যুগ্ম জেলা জজ আদলতে ৩৮/২০২০ বন্টন মোকদ্দমা আনা হয়েছে। যা বিচারাধীন আছে। যার রায় না পেয়েই বিবাদীগণ উক্ত জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয় আব্দুল মালেক (৫০) জানান, দীর্ঘদিন যাবত দেখছি এই জমিটি খায়রুল ইসলাম বুদ্ধু চাষ করে আসছে। আমার জানামতে বুদ্ধুই এই জমির প্রকৃত মালিক।
স্থানীয় আলহাজ্ব মোঃ বেলাল (৬০) আমি ছোটবেলা থেকেই দেখছি এই জমির আগের মালিক জঈম-ছঈম-মঈম (যাদের নিকট থেকে খায়রুল ইসলাম বুদ্ধু জমি ক্রয় করেছিল) এই জমিটি ভোগদখল করত এবং তাদের থেকে ক্রয় করার পর থেকে গত ৩০/৩২ বছর যাবত খায়রুল ইসলাম বুদ্ধুই এই জমিটি ভোগদখল করে খাচ্ছে।
উক্ত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, এই জমিটি খায়রুল ইসলাম বুদ্ধু দীর্ঘদিন ধরে ফসলাদী করে। তার নামে সকল কাগজপত্র ঠিক আছে। কাগজপত্র অনুযায়ী সেই জমির প্রকৃত মালিক।
এবিষয়ে উক্ত বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দু’পক্ষেরই কাগজপত্র দেখেছি। খায়রুল ইসলাম বুদ্ধুর কাগজপত্র ঠিক রয়েছে। এম,আর,আর,এস অনুযায়ী বর্তমানে জমির মালিক বুদ্ধুই। তবে বিবাদীরাদের নামে সিএস থাকলেও ঐ জমি নিজের দাবি করলে তাদের অবশ্যই কোর্টের মাধ্যমে বুদ্ধুর এম,আর. আর,এস বাতিল করে তারপর জমিতে যেতে হবে। কিন্তু তারা তা না করে অন্যায়ভাবে জমি দখল করতে বিশৃঙ্খলা করছে।
উক্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্ষেতলাল থানার এসআই মোখলেছুর রহমান জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে আমরা দুপক্ষকেই শান্ত থাকতে বলি এবং আপোষের উদ্দেশ্যে দুপক্ষের কাগজপত্র দেখতে দুপক্ষকেই থানায় ডাকি। তবে খায়রুল ইসলাম বুদ্ধু আসলেও বিবাদীরা আসেনি।
বিবাদীদের কোর্টে মামলা থাকলেও তারা কোর্টকে অমান্য করেই জোরপূর্বক উক্ত জমি দখলের চেষ্টা করে বারবার বিশৃঙ্খলা করছে।
এদিকে খায়রুল ইসলাম বুদ্ধু সাংবাদিকদের জানান, আমার সকল কাগজপত্র ঠিক আছে। আমি ৩০/৩২ বছর যাবত এই জমি দখল করে খাচ্ছি। কিন্তু বিবাদীরা জোরপূর্বক আমার জমি দখল করতে চাচ্ছে এবং বারবার আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।