ঢাকা, ০৭ অক্টোবর – গতকাল সোমবার হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। মঙ্গলবার তিনি পল্টনের ভলিবল স্টেডিয়ামে জিয়া আন্তঃভলিবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ অভিযোগ করেছেন।
আমিনুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপ হয়েছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা যে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন, তার প্রত্যেকটির প্রমাণ রয়েছে। আমি শুনে অবাক হয়েছি যে, ক্রীড়া উপদেষ্টা বিভিন্ন কাউন্সিলরকে ডেকে নিজে হুমকি দিয়েছেন, যাতে নির্বাচনে ভোট দেন। অনেক কাউন্সিলর আমাকে ফোন করে বলেছেন।’
আমিনুল হক আরও বলেন, ‘এ ধরনের আচরণ করতে পারেন, সেটা চিন্তাও করিনি। ক্রিকেট বোর্ড হচ্ছে বাংলাদেশের সবার। ক্রিকেট বোর্ড কোনো ব্যক্তির নয়। ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজে ক্রিকেট বোর্ডকে তার ব্যক্তিগত করে নিয়েছেন। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, যে কোনো মূল্যে তিনি বুলবুল ভাইকে (আমিনুল ইসলাম বুলবুল) সভাপতি বানাবেন। এই যে স্বেচ্ছাচারিতা, এই যে সরাসরি সরকারি হস্তক্ষেপ; আমার কাছে মনে হয় না বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা স্বাভাবিকভাবে কখনোই মেনে নেবেন।’
ক্লাব নিয়ে তৈরি হওয়া ঝামেলার বিষয়ে সাবেক এই তারকা গোলরক্ষক বলেন, ‘যে চারটি ক্লাব নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল, সেই চার ক্লাব থেকে কিন্তু চারজন পরিচালক এসেছেন। যে ক্লাবগুলো প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, যে ক্লাবগুলো নিয়ে ঝামেলা ছিল, সেই ক্লাবের প্রতিনিধি বোর্ডের ডাইরেক্টর হয়েছেন। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাইয়ের যে চিঠিকে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা রিট করে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, সেখানে কিন্তু একটি আইনি প্রক্রিয়া রয়ে গেছে। নির্বাচন হয়ে গেছে। তবে আদালত রায় দিয়েছেন যে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পর নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার মানে কী? যদি হাইকোর্ট চিঠিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেন, তবে ইতিমধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের থাকা সত্ত্বেও পুরো নির্বাচনব্যবস্থা কিন্তু বাতিল হয়ে যেতে পারে।’
এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন মানুষ মেনে নেবে না উল্লেখ করে আমিনুল হক বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয় যে, এ ধরনের একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আমরা যারা স্পোর্টসের লোকজন আছি; তারা কখনই মেনে নিতে পারি না। ভবিষ্যতেও আমরা মানবো না। ক্রিকেট বোর্ড থেকে কাউন্সিলর করার জন্য জেল প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তখন জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা ও বিভাগ থেকে কাউন্সিলর পাঠিয়েছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর দেখলাম বর্তমান যিনি সভাপতি রয়েছেন বুলবুল ভাই, তিনি চিঠি দিয়ে অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করেন। সেটা কিন্তু আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ১৫টি ক্লাব নিয়েও আমরা দেখেছি স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়। তারা চাইলো দুদককে পাঠিয়ে দিলো। আবার তারা চাইলো ক্লাবগুলোকে সাসপেন্ড করে দিলো। তারা চাইলো সাসপেনশন উঠিয়ে দিলো। সাপ-বেজির মতো যে খেলা, সেটা আমাদের পীড়া দিয়েছে।’
ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও তুলেছেন আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে, যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক যদি আর্থিক লেনদেন করে হয়, তাহলে তাদের হাতে ক্রিকেট কতটা নিরাপদ থাকবে; সেটা আমার মতো সবার মধ্যেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
সূত্র: জাগো নিউজ
এনএন/ ০৭ অক্টোবর ২০২৫