কোক স্টুডিও বাংলার সুরের জাদুতে হারিয়ে গিয়েছিল ঢাকা। শুক্রবার ১০০ জনের বেশি শিল্পীর পরিবেশনা দেখতে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৩০ হাজার ভক্ত। দুপুর দেড়টায় দরজা খোলার পর থেকেই সঙ্গীতপ্রেমীরা অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। আয়োজনের শুরুতেই অতিথিদের স্বাগত জানান এবং তাদের সাথে নিয়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপস্থাপক ও জনপ্রিয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আমিন হান্নান চৌধুরী এবং জুনায়েদ রাব্বানী।
দর্শকরা এই কৌতুক বেশ উপভোগ করেন। এরপর কোক স্টুডিও বাংলা’র গানের সাথে বিশেষ একটি পরিবেশনায় অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপরেই নিজেদের শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো নিয়ে মঞ্চে আসে হাতিরপুল সেশনস। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দর্শকরা তাদের গান উপভোগ করেন।
শিক্ষার্থী ও হাতিরপুল সেশনের পর, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মঞ্চে নাসেক নাসেক গানটি দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে কোক স্টুডিও বাংলা। কনসার্টটি ৫টি অংশে বিভক্ত ছিল, যেখানে প্রতিটি অংশে দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে কোক স্টুডিও বাংলা’র প্রথম ও দ্বিতীয় সিজনের গানগুলো উপভোগ করেন। কনসার্টে পরিবেশিত গানগুলো শুধু এই কনসার্টের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। এর জন্য মূল গানগুলোর কথার সাথে নতুন কিছু চরণ যুক্ত করা হয়েছে।
কোক স্টুডিও বাংলা’র সঙ্গীত প্রযোজক শায়ান চৌধুরী অর্ণব বলেন, “কোক স্টুডিও বাংলা সবসময়ই নতুন কিছু করার, বাংলা সঙ্গীতকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে এসেছে। ভক্তদের সরাসরি সেই অনন্য সুরের স্বাদ উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছে। যে পরিমাণ ভক্তরা কনসার্টে উপস্থিত হয়েছেন, আর যে ভালোবাসা তারা আমাদের দেখিয়েছেন, এতে আমরা সত্যি খুবই আনন্দিত। এই ভালোবাসা ভক্তদের জন্য আরও নতুন কিছু নিয়ে আসতে আমাদের উৎসাহিত করবে।”
কনসার্টের পুরো সময় জুড়ে দর্শকরা প্রথম ও দ্বিতীয় সিজনে তাদের পছন্দের গানগুলোর বিশেষ কনসার্ট সংস্করণ উপভোগ করেন। গানের সাথে সাথে আরও ছিল প্রসিদ্ধ নৃত্যপরিচালক ও নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ এবং শামীম আরা নীপা’র পরিচালনায় নৃত্যাঞ্চল নৃত্য দল এবং ম্যাশ-মাহবুব কোরিওগ্রাফি’র অসাধারণ নৃত্য। এতে গানগুলোতে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। কোক স্টুডিও বাংলা’র শিল্পীদের পাশাপাশি সবার প্রিয় আর্টসেলের দুর্দান্ত পরিবেশনাও সবার মন জয় করে নিয়েছে। কনসার্টে ৪০টির বেশি গান পরিবেশন করা হয়।
কোকা-কোলা বাংলাদেশের হেড অফ মার্কেটিং আবীর রাজবীন বলেন, “দুই সিজনে ভক্তদের কাছ থেকে আমরা অসাধারণ ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছি। কনসার্টে উপস্থিত দর্শকদের সংখ্যা এবং যেভাবে তারা আয়োজনটি উপভোগ করেছেন, তা কোক স্টুডিও বাংলা’র প্রতি তাদের ভালোবাসাই প্রমাণ করে। এই ভক্তরাই আমাদের নতুন কিছু, আরও ভালো কিছু করার প্রেরণা যোগান।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করার পর প্রায় ১০০জন গায়ক ও শিল্পীকে নিয়ে ২২টি গান প্রকাশ করেছে কোক স্টুডিও বাংলা। বাংলা সঙ্গীত ও সংস্কৃতির চোখের আড়ালে থাকা রত্নগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরেছে প্ল্যাটফর্মটি। এর ফলে বিশেষত তরুণ প্রজন্মের সঙ্গীত অনুরাগীরা বাংলা সঙ্গীতের মনোমুগ্ধকর জগতটিকে উপভোগ করতে পেরেছেন। দুই সিজন জুড়েই ভক্তরা এই প্ল্যাটফর্মের প্রতি তাদের ভালোবাসা জানিয়েছেন। তাদের এই সমর্থন ও ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম হিসেবে কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ-এর আয়োজন করা হয়েছে।