৫ October ২০২৫ Sunday ১২:০৩:৫০ AM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
নগর প্রতিনিধি:

শরতের নীল আকাশ। আকাশের নিচেই প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। চারদিক জুড়ে দুলছে কাশফুল। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন রূপকথার সাদা গালিচা। কেউ আবার ভাবতে পারে সাদা মেঘের ভেলা।
চোখ জুড়ানো এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রায় ৩৫ একর এলাকাজুড়ে।
বিসিকের পথ ধরে হাঁটতে গেলে মনে হয়, প্রকৃতি নিজেই তুলির আঁচড়ে ছবি এঁকেছে। হাওয়ার দোলায় দুলতে থাকা কাশফুল সূর্যের আলোয় আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এ দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
বিকেল গড়াতেই ভিড় বাড়ে ভ্রমণপিপাসুদের। বিশেষ করে শুক্রবারসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোয় মানুষের ভিড়ে পা ফেলানোর জায়গা থাকে না বিসিকের কাশবনে। কেউ ছবি তুলেন, কেউ আড্ডায় মেতে থাকেন, কপোত-কপোতী জুটি চুপচাপ বসে হারিয়ে যান প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে। সবাইকে শহুরে ব্যস্ততা, কোলাহল— সব ভুলিয়ে দেয় কাশবনের এই শুভ্রতা।
ভ্রমণে আসা কয়েকজন বলেন, ‘কাউনিয়া বিসিকের মতো এত বড় কাশবন বরিশালের আর কোথাও নেই। এখানকার কাশবন অনেক ভালো লাগে। পরিবেশটাও খুব সুন্দর। তাই ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রায়ই ঘুরতে আসেন এখানে।
বিসিক ঘুরে দেখা যায়, সাদা মেঘের খেলা, নীল আকাশের বিস্তৃতি আর কাশফুলের ঢেউ মিলেমিশে তৈরি করেছে এক কবিতার মতো দৃশ্য। প্রকৃতির এই সাজ কেবল চোখেই নয়, মনে এনে দেয় প্রশান্তি।
কবি হেনরী স্বপন বলেন, কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। প্রকৃতিতে যখন শরৎ আসে, তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এর আগমনি বার্তা। এই ঋতুতে বর্ষাকে বিদায় জানিয়ে নীল আকাশে তুলার মতো মেঘের সঙ্গে কাশফুলের মৃদু দোলানো প্রকৃতিকে ভরে তোলে মুগ্ধতায়। নীল আকাশের নিচে সাদা কাশফুল যখন বাতাসে দোলে, তখন মনে হয় যেন শ্বেত বসনা একঝাঁক নৃত্যশিল্পী নৃত্য করছে প্রকৃতির মঞ্চে। বিসিকে সেই আবহ এখন বিরাজ করছে।
এদিকে কাশবন ঘিরে বিসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে অস্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চা-নাশতা, কফি, শিশুদের খেলনাসহ সব কিছুই মিলছে কাশবনে। গড়ে উঠেছে অস্থায়ী কর্মসংস্থান। তবে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ কাশবন কেটে উজাড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা গণমাধ্যমকর্মী কাওসার হোসেন রানা বলেন, বরিশালে বিনোদনের জন্য তেমন বেশি জায়গা নেই। তাই বিসিকের এই কাশবনে মানুষ ঘুরতে আসে। এখন শুনছি এখানকার কাশবন কেটে ফেলতে দরপত্র আহ্বান করছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। কাশফুল অল্প কিছুদিনের জন্য থাকে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি বলব, কাশবনটি উজাড় না করে আরও কিছুদিন রাখা হোক।
তবে বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, কাশবন ঘিরে বাড়ছে অপরাধ। কিছু বখাটে ছেলে নানা ধরনের অপকর্ম করে বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাই বিসিক শিল্প মালিকদের নিজ উদ্যোগে ঘাসগুলো অপসারণের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |