রবিবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টায় কালিয়া ডাকবাংলা চত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী ও দুই শত বছরের পুরোনো এই পৈত্রিক ভিটা বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন এবং ‘ডাকবাংলা’ নামেই পরিচিত। সম্প্রতি এই ঐতিহাসিক স্থানটিতে দোকান ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, “কালিয়ার এই ভিটা শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের অংশ। এখানে প্রতিবছর চরক মেলা, ধর্মীয় আয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে স্থাপিত শহীদ মিনার ও নামফলক রয়েছে। অথচ তা উপেক্ষা করে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।”
এসময় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সমাজসেবক সাজ্জাদ হোসেন, ছাত্রনেতা রাকিবুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম, মেহেদী হাসান এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উত্তম ঘোষ ও মিন্টু ঘোষ।
বক্তারা আরও বলেন, “এই ঐতিহাসিক স্থান রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমরা চাই, নির্মাণ কাজ বন্ধ করে বিকল্প কোনো জায়গায় দোকান নির্মাণ করা হোক।”
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
১৯৪৮ সালে দেশভাগের সময় উদয় শংকর ও রবি শংকর পরিবারসহ ভারতে চলে গেলে তাদের বসতভিটা সরকারের হেফাজতে চলে যায়। পরবর্তীতে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কিন্তু বর্তমানে সেই বসতভিটার উত্তরে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
উদয় শংকর (১৯০০–১৯৭৭) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যকলার একজন পথিকৃৎ। তিনি ভারতীয় নৃত্যকে পাশ্চাত্যে পরিচিত করে তোলেন। তার ছোট ভাই পণ্ডিত রবি শংকর (১৯২০–২০১২) ছিলেন সেতার বাদনের কিংবদন্তি, যিনি বিশ্বব্যাপী ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এই দুই ভাইয়ের শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত পৈত্রিক ভিটা অবস্থিত বাংলাদেশের নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়।