কাজ শুরু না করেই বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদার

কাজ শুরু না করেই বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদার

এলজিইডির কেবিএস প্রকল্প

রঞ্জু আহমদ : খুলনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট পল্লী অবকঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে’ (কেবিএসআরআইডিপি) কাজ শুরু না করেই বিল তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কাজের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বিল তুলে নিয়েছেন। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয় জনগন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এলজিইডির সূত্র জানায়, খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাস্তা ব্রীজসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এরমধ্যে কয়েকটি কাজ বাস্তবায়ন না করেই বিল উঠিয়ে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এসব কাজ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হচ্ছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, পাইকগাছা কেবিএসআরআইডিপি’র প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছার বাঁকা জিসি সড়ক, পাটকেলঘাটা জিসি সড়ক পাইকগাছা অংশে মেরামতের কাজ পায় ঠিকাদার আব্দুল হাকিম। এ কাজে এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। এ পর্যন্ত ঠিকাদার বিল উঠিয়ে নিয়েছেন ৪৬ লাখ ২হাজার টাকা।
পাইকগাছা কেবিএস আরআইডিপি’র প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছার অন্ধারমানিক বাজার বাইনচাপড়া খেয়াঘাট রাস্তা ইট সলিং, ফুলবাড়িয়া বাজার দারুল মল্লিক খেয়াঘাটের সলিং রোড, শান্তাবাজার আমীরপুর খেয়াঘাট সলিং রাস্তা, গোলাবাড়িয়া মোল্লা পাড়া বিসি মোড় সলিং রাস্তার কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে এ কাজের বিপরীতে ২কোটি ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ও ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিল উঠিয়ে নিয়েছেন ঠিকাদার আব্দুল হাকিম।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন-উল্লেখিত এলাকাগুলো বাজার এলাকা। এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল। সংস্কারের অভাবে ওই এলাকা দিয়ে মানুষের চলাচল দায়। রাস্তা ইট সলিং থাকায় গাড়ি-ঘোড়া চলতে পারে না। মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ রয়েছে। তবে রোডটির কাজ এখনও শুরু করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
গত ২৩ জুন এই বিল উঠিয়ে নেন ঠিকাদার। বিল তোলার সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার হজ পালনে সৌদি আরবে ছিলেন। তার জামাতা মো: আসাদ পে অর্ডার দেয়া এবং বিল তোলার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করেন। কাজ শুরু না করেই বিল ওঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারের জামাই মো: আসাদ বলেন, এসব বিষয় আমি কিছু জানি না। আমার শ^শুর জানে। তিনি হজ¦ পালনের জন্য দেশের বাইরে আছেন।
বিল তোলার বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের পাইকগাছা উপ সহকারি প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমান খানের সাথে। তিনি বলেন, উক্ত সড়কগুলোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। বিশেষ করে আন্ধারমানিক, ফুলবাড়িয়া, শান্তাবাজার, গোলাবাড়ি এলাকার কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার। তবে পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে কোন ঠিকদারের কাজের ওপর সন্তুষ্ট হলে নির্বাহী প্রকৌশলী পে অর্ডারের বিপরীতে টাকা দিতে পারেন। তবে এটার অফিসিয়ালী কোন ভিত্তি আছে কিনা আমার জানা নেই।
খুলনা এলজিইডির সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাসেক খান বলেন, যেসব ঠিকাদার নিয়ম মেনে কাজ করেন, কাজ ফেলে রাখেন না তাদেরকে আমরা সুবিধা দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। জুন মাসে এই টাকা ছাড় না করালে টাকা ফেরত যেতো। তাতে উন্নয়ন কাজ থমকে যেতো। এ জন্য আমরা এলজিইডির একাউন্টে পে অর্ডারের বিপরীতে অর্থ ছাড় করেছি। এ প্রক্রিয়া বৈধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী তার ক্ষমতাবলে এ কাজ করতে পারেন।

Explore More Districts