কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র – DesheBideshe

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র – DesheBideshe

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র – DesheBideshe

ওয়াশিংটন, ২৫ অক্টোবর – মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো, তার স্ত্রী এবং ছেলেকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয়। ট্রেজারিমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিবৃতিতে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টকে ‘মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষক’ উল্লেখ করে মার্কিন ট্রেজারিমন্ত্রী বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোকেন উৎপাদনে উল্লম্ফন ঘটেছে কলম্বিয়ায়। ২০২২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত কলম্বিয়ায় যে পরিমাণ কোকেন উৎপাদিত হচ্ছে, তা গত কয়েক দশকের চেয়েও বেশি। এই বিপুল পরিমাণ কোকেন বন্যার মতো প্রবেশ করছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং মার্কিনিদের জীবন বিষময় করে তুলছে।”

“এই কোকেন উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের দমন করার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট পেত্রো এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন; কিন্তু যেহেতু আমাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিকে মাদকের সর্বনাশা ছোবল থেকে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ কারণেই কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির মতো কঠোর পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকপাচার সহ্য করব না।”

এদিকে নিষেধাজ্ঞা জারির পর এক প্রতিক্রিয়ায় গুস্তাভো পেত্রো দাবি করেছেন ট্রেজারি মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয় যা বলছে, তা মিথ্যা। আমার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে কোকেনের উৎপাদন ‍বৃদ্ধি নয়, বরং হ্রাস পেয়েছে। এই সরকারের আমলে যে পরিমাণ কোকেন জব্দ করা হয়েছে, বিশ্বের ইতিহাসে আর কোনো দেশ এত কোকেন জব্দ করেনি।”

মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার হয়। এই পাচারের প্রধান রুট সমুদ্রপথ। গত দুই মাসে সাগরে অভিযান চালিয়ে মাদক পাচারকারী সন্দেহে বোমা নিক্ষেপ করে ১০টি নৌযান ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৩ জন।

ধ্বংস হওয়া সবগুলো নৌযান মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না। প্রেসিডেন্ট পেত্রো নৌযানে হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন ট্রাম্পকে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাতে নেতিবাচক সাড়া দেন। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টকে ‘ঠগ’ ও ‘মাদক পাচারকারী’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

বস্তুত, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে গুস্তাভো পেত্রোর সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় তার। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে গত মাসে নিউইয়র্কে আসার কথা ছিল পেত্রোর। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ভিসা না দেওয়ায় তিনি আসতে পারেন নি।

তাকে ভিসা না দেওয়ার প্রধান কারণ, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদান করা।

গত সপ্তাহে কলম্বিয়ায় মার্কিন সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। দেশটির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।

ট্রেজারি মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা জারির পর এক্সে পোস্ট করা প্রতিক্রিয়ার শেষে তিনি লিখেছেন লাতিন আমেরিকার বামপন্থি বিপ্লবীদের একটি স্লোগান। সেই স্লোগানটি হলো, “আমরা এক পা-ও পিছু হটব না এবং কখনও হাঁটু গেড়ে বসব না।”

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ২৫ অক্টোবর ২০২৫



Explore More Districts