জহির রায়হান : বর্তমানে সারা বিশ্বের এক আতঙ্কের নাম নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস সারা বিশ্বের প্রায় ১৯৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই এই ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ এবং বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সারাদেশে চলছে লকডাউন। সেইসাথে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে এবং বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হতে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে মাইকিং করাসহ জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে মাঠে কাজ করছেন জেলা/উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন পরিষদ, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান দিকনির্দেশনা মূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিস্ট্রিক্ট পুলিশের ভেরিফাই ফেইসবুক পেইজে। স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল :
১. ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য আমাদের প্রথম কাজটাই হচ্ছে এর যে ‘চেইন অব ইনফেকশান’ ( ইনফেকশান শৃঙ্খল) ভেঙে দিতে হবে। তাহলে এ ভাইরাসের বিস্তার আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণেই কিন্তু বারবার বলা হচ্ছে, যতটা সম্ভব ঘরেই থাকুন। বাইরে বের হবেন না। বাইরে বের না হলে কি হবে বলুন তো? ঠিকই ধরেছেন, আমরা বাইরে বের না হলে আক্রান্ত মানুষের শরীর থেকে ভাইরাস সুস্থ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না। আর সেটা যদি না পায় তাহলে কিন্তু আপনা-আপনি ভাইরাসের বিস্তার বন্ধ হয়ে যাবে। আর এমনটা অন্ততপক্ষে ৩ সপ্তাহ চলতে পারলে ভাইরাসের জীবনচক্রও শেষ হয়ে যাবে। মানে, ভাইরাস নিজেই মারা যাবে।খারাপ বদ অভ্যাস এটা । কাশি দেওয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে টিস্যু বা রুমাল দিয়ে ঢেকে নিন। না হলে হাতের কনুই ব্যবহার করুন। পরে ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
২. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত ধোয়া ও হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে, আপনজন ও সমাজের অন্যদের নিরাপদ রাখার স্বার্থেই এটি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সাবান-পানিই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। কারণ, এই ভাইরাসের আবরণ চর্বিযুক্ত, সাবান-পানিতে এটি খুব দ্রুত গলে যায়। এ ছাড়া ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সাবান-পানিতেই আমরা বেশি গুরুত্ব দিই। যেকোনো ব্র্যান্ডের সাবান (কাপড় ধোয়া বা গোসলের)–পানিই করোনা প্রতিরোধে কার্যকর। করোনা প্রতিরোধের জন্য ২০ সেকেন্ড হাত সাবান দিয়ে ঘষতে হবে। আঙুলের ফাঁক, নখ ও এক হাত দিয়ে আরেক হাত কচলিয়ে হাত ধুতে হবে।
৩. এর বাইরে আরেকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে নেওয়া কিংবা কিছুই না থাকলে কনুই ভাঁজ করে হাতের আস্তিন দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে। এটি খুবই সাধারণ শিষ্টাচারের বিষয়। আপনি যখন একজনের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন আপনার কথার সঙ্গে থুতু ছিটে যাচ্ছে কি-না, হাঁচি-কাশির ছিটা অন্যের শরীরে বা কাপড়ে লাগছে কি না, তা লক্ষ রাখতে হবে। অবশ্য এই শিষ্টাচারের শিক্ষা মানুষ পরিবার থেকেই পায়। যেখানে সেখানে থুতু না ফেলাও এই শিষ্টাচারের অংশ।
আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যে ড্রপলেট (তরল কণা) যায়, সেখান থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায়। তাই আপনি যদি মুখ না ঢেকে হাঁচি-কাশি দেন, যেখানে সেখানে থুতু ফেলেন, তবে এই রোগ অন্যের মধ্যে ছড়াতে পারে।
সুতরাং নীচের নিয়মাবলী সঠিকভাবে পালন করলে আপনি, আপনার পরিবার, সমাজ এবং দেশ করোনা ভাইরাস থেকে রেহাই পাবেঃ
১. বারবার হাত ধোয়া:
নিয়মিত এবং ভালো করে বারবার হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ)। কেন? এ কথা প্রমাণিত যে সাবান–পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুলে এই ভাইরাসটি হাত থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। হাতে ময়লা বা নোংরা দেখা না গেলেও বারবার হাত ধুতে পারেন। তবে বিশেষ করে হাত ধোবেন অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যার পর, হাঁচি–কাশি দেওয়ার পর, খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, পশুপাখির পরিচর্যার পর।
২. দূরে থাকুন:
এই সময় যেকোনো সর্দি–কাশি, জ্বর বা অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত এক মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। কেন? আর সব ফ্লুর মতোই এই রোগও কাশির ক্ষুদ্র ড্রপলেট বা কণার মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমিত করে। তাই যিনি কাশছেন, তাঁর থেকে দূরে থাকাই ভালো। ইতিমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। অসুস্থ পশুপাখি থেকে দূরে থাকুন।
৩. নাক-মুখ স্পর্শ নয়:
হাত দিয়ে আমরা সারা দিন নানা কিছু স্পর্শ করি। সেই বস্তু থেকে ভাইরাস হাতে লেগে যেতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে কখনো নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করবেন না।
৪. কাশির আদবকেতা মেনে চলুন:
নিজে কাশির আদবকেতা বা রেসপিরেটরি হাইজিন মেনে চলুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন। কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকুন। টিস্যুটি ঠিক জায়গায় ফেলুন।
৫. প্রয়োজনে ঘরে থাকুন:
অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
৬. খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা:
কাঁচা মাছ-মাংস আর রান্না করা খাবারের জন্য আলাদা চপিং বোর্ড, ছুরি ব্যবহার করুন। কাঁচা মাছ–মাংস ধরার পর ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে সেদ্ধ করে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন। অসুস্থ প্রাণী কোনোমতেই খাওয়া যাবে না।
৭. ভ্রমণে সতর্ক থাকুন:
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং অন্য দেশ থেকে প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
৮. অভ্যর্থনায় সতর্কতা:
কারও সঙ্গে হাত মেলানো (হ্যান্ড শেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন
৯. কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল এর বাটন/স্ক্রিন নিয়মিত পরিষ্কার করুন। আপনার ব্যবহৃত এসব জিনিস এখন অন্যরা ব্যবহার না করলেই ভালো। অনেকটা এমন যে, ‘যার যার তার তার’ এর মতো বিষয়। বিশেষ করে বাচ্চাদেরকে আপনার ব্যবহৃত এসব জিনিস দেবেনই না।
হোম কোয়ারেন্টিন কী?
হোম কোয়ারেন্টিন মানে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি নিজ বাড়িতে স্বেচ্ছায় একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকবেন এবং এ সময় নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
করোনা ভাইরাসের কারণে কারা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন?
যেসব দেশে কোভিড-১৯ এর স্থানীয় সংক্রমণ ঘটেছে, সেসব দেশ থেকে যেসব যাত্রী এসেছেন এবং আসবেন (দেশি-বিদেশি যেকোনো নাগরিক), যাঁরা দেশে শনাক্তকৃত ৩ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন এবং যার অথবা যাঁদের কোনো শারীরিক উপসর্গ নেই, তাঁদের ১৪ দিন স্বেচ্ছা/গৃহ কোয়ারেন্টিন পালন করতে হবে।
করোনাভাইরাসের জন্য কীভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন?
হোম কোয়ারেন্টিন মানে শুধু বাড়িতে থাকা নয়। তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিষেধও পালন করতে হবে। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে।
১. বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন।
২. আলো–বাতাসের সুব্যবস্থাসম্পন্ন আলাদা ঘরে থাকুন। সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দূরে থাকুন। রাতে পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন।
৩. আলাদা গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয়—এমন স্থানের সংখ্যা কমান এবং ওই স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো–বাতাসের ব্যবস্থা করুন।
৪. স্তন্যদায়ী মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। তবে শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।
৫. বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে একই ঘরে অবস্থান করলে, বিশেষ করে ১ মিটারের মধ্যে আসার প্রয়োজন হলে, অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।
৬. কাশি, সর্দি, বমি ইত্যাদির সংস্পর্শে এলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান–পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।
৭. সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৮. সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকনো করে ফেলুন। টিস্যু না থাকলে শুধু হাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ালে/গামছা ব্যবহার করুন এবং ভিজে গেলে বদলে ফেলুন।
৯. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না।
১০. কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি–কাশির সময় টিস্যু পেপার/মেডিকেল মাস্ক/কাপড়ের মাস্ক/বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং ওপরের নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করুন।
১১. ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। আপনার খাওয়ার বাসনপত্র—থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। এসব জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।
কখন আপনার কোয়ারেন্টিন শেষ হবে?
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার কোয়ারেন্টিন শেষ হবে। একজন থেকে অন্যজনের কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা আলাদা হতে পারে। তবে সাধারণত এ সময়সীমা ১৪ দিন।
কোয়ারেন্টিনে থাকাকালে কী কী করা যাবে?
কোয়ারেন্টিনের অবসর সময়কে কাজে লাগান। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), সিডিসি এবং আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে সঠিক তথ্য পাবেন। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ফোন/মোবাইল/ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন। দৈনন্দিন রুটিন, যেমন: খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলুন। সম্ভব হলে বাড়িতে বসে অনলাইনে বা ফোনে অফিসের কাজ করতে থাকুন। বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা ওপরের নিয়মগুলোর পরিপন্থী নয়, এমন যেকোনো বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন।
পরিবারের সদস্যদের জন্য নির্দেশাবলি-
বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে (যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা প্রভৃতি) ভুগছেন না, এমন একজন ব্যক্তি পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারেন। তিনি ওই ঘরে বা পাশের ঘরে থাকবেন, অবস্থান বদল করবেন না। কোয়ারেন্টিনে আছেন—এমন ব্যক্তির সঙ্গে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দেবেন না। পরিবারের মানুষ যে কাজগুলো করবেন:
১. কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা তার ঘরে ঢুকলে হাত পরিষ্কার করবেন সাবান–পানি দিয়ে।
২. খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে হাত পরিষ্কার করবেন।
৩. গ্লাভস পরার আগে ও খোলার পরে হাত পরিষ্কার করবেন।
৪. যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হবে, তখনই হাত পরিষ্কার করবেন।
৫. খালি হাতে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না।
৬. কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত বা তাঁর পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা ওই রুমে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখুন। এসব আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন।
৭. ঘরের মেঝে, আসবাবের সব পৃষ্ঠতল, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের জন্য ১ লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম (২ টেবিল চামচ পরিমাণ) ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করুন ও ওই দ্রবণ দিয়ে সব স্থান ভালোভাবে মুছে ফেলুন। তৈরিকৃত দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
৮. কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিকে নিজের কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গুঁড়া সাবান বা কাপড় কাচা সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে বলুন এবং ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে ফেলুন। নোংরা কাপড় একটি লন্ড্রি ব্যাগে আলাদা রাখুন। মলমূত্র বা নোংরা লাগা কাপড় ঝাঁকাবেন না এবং নিজের শরীর বা কাপড়ে যেন না লাগে, তা খেয়াল রাখবেন।
৯. যদি কোয়ারেন্টিনে থাকাকালে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় (জ্বর, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি), তবে দ্রুত আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন
এ সময়ে কোনো কারণে অসুস্থ বোধ করলে, জ্বর হলে, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন। তিনি বিষয়টি গোচরে আনতে ও ভাইরাস ছড়ানো বন্ধে ভূমিকা রাখতে পারবেন। অথবা আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর: ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১ এবং ০১৯৩৭১১০০১১.
পুলিশ সুপার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।