
বিশেষ প্রতিনিধি->>
ফেনীতে করোনাভাইরাসে ২৪ ঘন্টায় ১৫৬ জন নতুন শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলার ৩৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করে আরও ১৫৬ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এমন তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
নতুন ১৫৬ জনসহ শনাক্তকৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১১ জন। এর আগে সোমবার একদিনে রেকর্ড ১৭৬ জন সংক্রমিত হয়েছিলো। মঙ্গলবার ১৬৯ জন, বুধবার ১৫৭ জন শনাক্ত হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগের একই সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তকৃতদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৮৭ জন, দাগনভূইয়া ২৩ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৮ জন, পরশুরামে ১১ জন, ফুলগাজীতে ৯ জন ও সোনাগাজীতে ৮ জন রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দু’জন মারা গেছেন।
বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড পজেটিভ রোগী হয়ে ভর্তি রয়েছে ৭৭ জন রয়েছে। এর মধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ২৮ জন, দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জন, পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন, সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ও শহরের ডায়াবেটিস হাসপাতালে ১ জন ভর্তি রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বুধবার পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য ফেনীতে ২৮ হাজার ৩৩২টি নমুনা সংগ্রহ করে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মহিপাল বক্ষব্যাধী হাসপাতালের জীন এক্সপার্ট মেশিনে পাঠানো হয়। যার মধ্যে ২৮ হাজার ৬৪ জনের নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে। করোনা শনাক্তের শুরুতে ফেনীর পরীক্ষা চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেস (বিআইটিআইডি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে করা হতো।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, জেলায় শনাক্তের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে তিন গুণের বেশি। জেনারেল হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডে ৩০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ১২২ জন। অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন ১০৫ জন। আইসিইউতে ভর্তি ১০ জন।
সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস সালেহীন জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ৩৬১ জন। নতুন করে ৭২ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৪৫৭ জন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় কর্মরত সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেনসহ এ পর্যন্ত ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফেনীতে গত বছরের ১৬ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। কোভিড-১৯ শনাক্ত’র সংখ্যা ১ থেকে ৫শ ছাড়াতে সময় লাগে ৭৬ দিন। পরের ৫শ ব্যক্তি সংক্রমিত হতে সময় লাগে ২৬ দিন। আর পরবর্তী ৫শ ব্যক্তি সংক্রমিত হতে লাগে ৩৫ দিন সময়। চার মাসের মাথায় সংক্রমিতের সংখ্যা ১ হাজার ৫শ অতিক্রম করে।
সাত মাসের মাথায় সংক্রমিতের সংখ্যা ২ হাজার ও সাড়ে ১১ মাসের মাথায় সংক্রামিতের সংখ্যা ২ হাজার ৫শ অতিক্রম করে। পরবর্তী ৫শ শনাক্ত হয়ে মাত্র ১৫ দিন সময় লেগেছে। পরবর্তী ৫শ শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ২৮ দিন।
কোভিড-১৯ শনাক্ত’র ১৪ মাসের মাথায় সংক্রামিতের সংখ্যা ৪ হাজার অতিক্রম করেছে। সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার হতে (৫শ’) শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ৪০ দিন। চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ১৩ দিন। সাড়ে চার হাজার থেকে ৫ হাজার শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ৭ দিন। ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ৫ দিন। সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ৩ দিন। কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার ১৫ মাসে সংক্রামিতের সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজার অতিক্রম করেছে।
Sharing is caring!