কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু – লেখক : ফারহানা মিনি |

কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু – লেখক : ফারহানা মিনি |

কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু – লেখক : ফারহানা মিনি |

 

রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :

কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু ।তিনি ছিলেন বিনয়ী আত্মত্যাগী ধৈর্য্যশীল অকুতোভয় এক বিল্পবী বামপন্হী রাজনীতিবিদ।তার বাবার নাম ডাঃ এ কে এম ওয়াহিদ,মাতার নাম রাজিয়া বেগম।পাঁচ ভাই চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেঝো ।তার জন্ম পহেলা (০১) নভেম্বর ১৯৪৯ ইং। তুখর মেধাবী এই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেশ মাতৃকার টানে নিপীড়িত নির্যাতীত শোষিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিপ্লবের কাজে আত্ম নিয়োগ করেন।

কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু ১৯৬৪ সালে থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হন।রাজবাড়ী ছাত্র আন্দোলনের সম্পৃক্ত থেকে তিনি মার্কসবাদী আদর্শ রাজনীতিকে জানতে বুঝতে আরো আগ্রহী হয়ে ওঠেন।তিনি পার্টির নির্দেশে ঘরবাড়ি ছেড়ে বিল্পবের কাজে নিজেকে নিয়োগ করতে দ্বিধান্বিত ছিলেন না ।তাই তো এক সময় তিনি মাদারীপুর জেলার ভেদরগঞ্জ নড়িয়া অঞ্চলের কৃষক আন্দোলন কে সংগঠিত করতে অপরিচিত এলাকায় চলে যান । ভূমিহীন দরিদ্র কৃষকদের বাড়িতে এক আধবেলা খেয়ে না খেয়ে তাদের বাড়িতে থাকেন,তাদের পাশে দাঁড়ান তাদেরই একজন হয়ে। সত্তরের দশকে যখন কমিউনিষ্টরা অসংখ্য খন্ড বিখন্ডে বিভক্ত ও বিপর্যস্ত ,তখন কমরেড খায়রু যথারীতি একজন কমিউনিস্ট লীগ নেতা। উনসত্তরে তিনি ঘুরে আসেন সমাজতান্ত্রিক চীন।

তাদের প্রতিনিধি ছিলেন কমরেড স্বরদ্বিন্দু দস্তিদার তার সংগ্রামী সফর সঙ্গী ছিলেন আনোয়ার, শাহ্ আলম মোল্লা সহ আরো অনেকে। সেখানে তিনি চীনের সুবিশাল ঘাঁটি চিং কাং পাহাড় সহ মূল জায়গা গুলো ঘুরে ঘুরে তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভান্ডার আরো সমৃদ্ধ করেন। আশির দশকে ২০ আগষ্ট নারিন্দার ভজহরি সাহা স্ট্রিটে রশিদ ভাইয়ের বাসায় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি, কমিউনিস্ট লীগ ও সাম্য বাদী দলের অর্থাৎ তিন পার্টির ঐক্যের সমন্বয়ে কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটি গঠন হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক সহ সব গন সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮১ সালের ১৫ই মার্চ বেড়ায় চারটি কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ৪০ হাজার কৃষক সমাবেশ হয়। আর সেখান থেকে গঠিত হয় জাতীয় কৃষক সমিতি।

আর এই জাতীয় কৃষক সমিতির প্রথম দপ্তর সম্পাদক ছিলেন এই কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রু। কমিউনিস্ট ঐক্য ও কৃষক সংগঠনের ঐক্যর ক্ষেত্রে তার অবদান চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে। কমরেড কথার অর্থ যেমন প্রকৃত বন্ধু বা সাথী। কমরেড আল্লা নেওয়াজ মাহমুদ খায়রুর বেলায় ও তার ব্যাত্যয় ঘটেনি। তিনি তার এই স্বল্প জীবনে দেখিয়ে ছিলেন সমাজ সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কমরেড খায়রুর মতাদর্শ গত সংগ্রাম,রাজনৈতিক বিতর্ক ছিল পক্ষপাতহীন যা এখন রাজনীতিতে প্রায় অনুপস্থিত। আজ তার ৪২তম প্রয়াণ দিবস। এই বীর সংগ্রামী নেতা মাত্র ৩২ বছর বয়সে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮১ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন ।

লেখক – ফারহানা মিনি, সহ প্রধান শিক্ষক- আল্লা নেওয়াজ খায়রু উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ী।

Explore More Districts