কতটা গরম সহ্য করতে পারে মানুষ

কতটা গরম সহ্য করতে পারে মানুষ

কতটা গরম সহ্য করতে পারে মানুষ

আমরা এখন বৈশ্বিক ফুটন্ত যুগে বাস করছি। জাতিসংঘের এমন সতর্কবার্তায় বিস্মিত হওয়ার কারণ নেই। পরিবর্তিত জলবায়ু মানুষের শরীর ও স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা জানতে সম্প্রতি একটি কৃত্রিম দাবদাহ পরীক্ষার আয়োজন করেন-যুক্তরাজ্যের সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড্যামিয়েন বেইলি। এতে অংশ নেন দেশটির আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা অধ্যাপক লিজি কেন্ডন। পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষায়িত কক্ষের তাপমাত্রা ২১ থেকে বাড়িয়ে প্রথমে ৩৫ এবং পরে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানো হয়।

অধ্যাপক কেন্ডন বলেন, ‘অধ্যাপক বেইলি আমাকে বিশেষ চেম্বারে নিয়ে যান। বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামে পরিপূর্ণ কক্ষটিতে থাকা যন্ত্রপাতি দিয়ে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কক্ষটি পুরোপুরি বন্ধ করে এর তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রেখে পরীক্ষা শুরু করা হয়। আমার ত্বকের তাপমাত্রা এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, হৃত্স্পন্দন ও রক্তচাপ পর্যবেক্ষণের জন্য গায়ে একটি যন্ত্র লাগানো হয়। প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা হয় একটি বড় মাউথপিস। আর ঘাড়ের ক্যারোটিড ধমনি থেকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল পরীক্ষার জন্য আলট্রাসাউন্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

কেন্ডন বলেন, ‘এরপর দ্রুত একটি মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করানো হয়, যেখানে ৩০টি শব্দ মুখস্থ করা লাগে। পরীক্ষা শেষে কক্ষের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করা হয়। ওই সময় আমার হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃৎ ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আশপাশের মূল তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখাই ছিল লক্ষ্য। আমার শরীরে কিছুটা পরিবর্তন স্পষ্ট হয়। আমাকে তুলনামূলক বেশি লাল দেখাচ্ছিল। এর কারণ হচ্ছে শরীর থেকে তাপ বের হওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করতে ত্বকের কাছাকাছি রক্তনালিগুলো খুলে যায়। আমি ঘামছিলাম কিন্তু ঘাম বাষ্পীভূত হওয়ায় শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছিল। তাপমাত্রা যখন ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানো হয় তখন মনে হচ্ছিল আমি ঝাঁকুনি খাচ্ছি।’

অধ্যাপক কেন্ডন বলেন, ‘পরীক্ষা শেষে দেখা যায়—আমার শরীর থেকে ৪০০ মিলিলিটার পানি ঝরে গেছে। হৃত্স্পন্দন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে এবং ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রতি মিনিটে অতিরিক্ত এক লিটার রক্ত পাম্প করেছে আমার হৃৎপিণ্ড। তাপমাত্রা যখন বাড়ে তখন হৃৎপিণ্ডের ওপর এই অতিরিক্ত চাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে মানুষ মারা যায়।

সূত্র : বিবিসি

এআই

Explore More Districts