
নিজস্ব প্রতিবেদক->>
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে সারাদেশের মতো প্রথম দিন ফেনীতেও তৎপর ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।চলমান লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে ঘর থেকে বের হওয়ার অভিযোগে রেস্ট্রেুরেন্সসহ ১০১ জনকে অর্থদন্ড (জরিমানা) করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলা সদরসহ জেলার ছয় উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিনা কারণে ঘোরাফেরা করায় বিভিন্ন এলাকায় ১৬টি পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১০১ জনকে আটক করে মামলার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দণ্ডবিধির ধারা অনুযায়ী ৪৫ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার রুবাইয়া আফরোজ জানান, শহরের ট্রাংক রোড, কলেজ রোড, রেলগেট, জেনারেল হাসপাতাল মোড়, সদর উপজেলা পরিষদ, সালাউদ্দিন রোডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮, ২৬৯ ধারায় ১৩টি মামলায় ১৩ জনকে ৩ হাজার ৪শ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এসময় মাস্কও বিতরণ করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার লিজা আক্তার বিথী জানান, শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, ট্রাংক রোড, নাজির রোড, মহিপাল ও হাজারী রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ ধারায় ১০টি মামলায় মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় জনসাধারণকে লকডাউন মেনে ঘরে থাকতে এবং জরুরী প্রয়োজন ব্যাতিত ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। একই সাথে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার এবং মাস্ক পরার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়।
ট্রাংক রোডের নবী হোটেলের সত্বাধিকারী মেজবাহ উদ্দিন কামাল জানান, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী রেস্টুরেন্ট সকাল ৮টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত (পার্সেল বিক্রী) রেস্ট্রেুরেন্ট খোলা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিকেলে ভ্রাম্যামাণ আদালত তার প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। তিনি আরও বলেন, তার রেস্ট্রেুরেন্টে তৈরিকৃত খাবার অবিক্রীত থাকায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আজগর আলী জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করায় বৃহস্পতিবার ৯৯ টি মামলা হয়েছে। ১৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১০১ জন দন্ডিত ব্যক্তি থেকে ৪৫ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা আদায় কর হয়।
পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্রাশি করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, সরকারী বিধিনিষেধ মেনে কাঁচাবাজার আর নিত্যপন্য ছাড়া মার্কেট, বিপনীবিতানসহ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। সরকারী বিধিনিষেধ যারা ভঙ্গ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা সংক্রামন বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে ১ জুলাই থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন চলছে।
Sharing is caring!