জামালগঞ্জ সংবাদদাতা
জামালগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পিচ ঢালা পথ পেরুলে সাচনাবাজার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের সারি সারি রঙিন ঘর। দূর থেকে দেখলে মনে হয় পাকা ঘরগুলোর টিনের চালা যেন লাল হলুদের সমহারা। এর একপাশে রয়েছে সুরমা নদী, অপর পাশে সাচনা রামনগর বাজারের পাকা সড়ক। নদীর তীরে ঘরগুলোর সামনে শোভা পাচ্ছে শাকসবব্জির বাগান। রঙিন টিনের আধাপাকা ঘরগুলো দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এ যেন এক খন্ড শান্তির নীড়। এই নীড়েই সুখের স্বপ্ন দেখছেন সহায় সম্বলহীন একদল নারী-পুরুষ। নদী ও সড়কের গা ঘেঁষে গড়ে উঠা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৪২টি। জনসংখ্যার হিসেবে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষের বসবাস।
প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ৪২টি শান্তির নীড়ে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ৩টি টিউবওয়েল। হাঁস-মুরগী, গবাদিপশু পালন ও সবজির বাগানসহ নানা উপায়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন এখানকার বাসিন্দারা। শিক্ষার ছোঁয়াও লেগেছে তাদের মাঝে। এখানকার অর্ধশতক ছেলেমেয়ে পড়ালেখা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তবে স্কুলের দূরত্ব প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার হওয়ায় আশ্রয়ণের পাশে অন্তত একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের দাবি তাদের।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারীরা হাঁসমুরগীদের খাবার দিচ্ছেন। ছোট ছোট শিশুরা খেলাধুলা করছে। পুরুষ দৈনন্দিন কাজে। নারীরা রান্না-বান্নার কাজ করছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী সমরাজ বিবি (৬৫) জানান, পার্শ্ববর্তী নূরপুর গ্রামের বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাথাগুজার ঠাঁই হয়েছে তার। তিনি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেছেন তিনি যেন শত বছর বেঁচে থাকেন।
এছাড়াও হোসনে আরা (৫০), সাবিনা ইয়াসমীন (২৫), সজীবা খাতুন (৩৬), মো. জব্বার মিয়া (৫০), সোহেল মিয়া (৪০) জানান, পাশের গ্রামে নূরপুরের বাড়িঘর বছরের পর বছর নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আবার কেউ খাস জমিতে ছাপড়া ঘর তৈরি করে মানবেতর জীবনযাপন করতেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উপহারের বাসস্থানসহ নানাবিধ সুবিধায় বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনমান। ঘরসহ জায়গা পেয়ে অনাবিল হাসি ফুটছে তাদের মুখে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও জায়গা পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় দরিদ্র্যদের মাঝে। নদী ভাঙনে বিলীন হওয়া ৩৮টি পরিবার অন্যের বাড়িতে অথবা খাস জমিতে অস্থায়ী ঘরে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও ভূমি পেয়ে বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনমান। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাস করা পরিবারগুলো মানবেতর জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে এখন তারা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করছেন।
