সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ও মামলার বাদীর পূর্ণ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে সাক্ষ্য দেন বাদী। আদালতে ক্যামেরা ট্রায়ালে ভুক্তভোগীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও তা হয়নি। পরবর্তী তারিখে তার সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবুল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আদালতে মামলার বাদীর পূর্ণ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এর আগের তারিখে তিনি আংশিক সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।’
জানা গেছে, এর আগে গত ১৯ মে দুপুরে মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর স্বামীর আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। ওই দিন এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের তৎকালীন দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
এর আগে আগে গত ১৩ মে দুপুরে আদালতে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় হৃদয় পারভেজ। সুনামগঞ্জের বাসিন্দা হৃদয় ধর্ষণকাণ্ডের সময়কালে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ২০৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর তিনি ছাত্রাবাস ছেড়ে যান।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের আঙিনায় স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২১) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ও র্যাব। পরবর্তীতে আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।
২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
আসামিরা হলেন— সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ও মাহফুজুর। তারা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন।