
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছে দক্ষিণ পশ্চিমঞ্চলের অন্যতম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা। দীর্ঘ সিরিয়ালে না থেকে সরাসরি এসে ফেরিতে উঠছে যানবাহন। ফলে এবারই প্রথম ভোগান্তি ও অপেক্ষা ছাড়াই ঈদে বাড়ী ফিরবে দক্ষিণঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
পবিত্র ঈদ উল অাযহা উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে এবার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করবে ২১টি ফেরি।
বিআইডব্লিটিসির ডিজিএম শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে তাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। ঈদের চাপ শুরুর অাগেই বহরে ২১টি ফেরি যুক্ত করা হবে। প্রয়োজন হলে অারও ১টি ফেরি বাড়ানো হবে। এখন যেহেতু চাপ একটু কম, যে কারণে সামান্য ত্রুটি গুলো মেরামত করে নিচ্ছেন। যেন ঈদে কোন সমস্যা না হয়।
দক্ষিণঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট। প্রতিদিন এ ঘাট ব্যবহার করে কয়েক হাজার যানবাহন নদী পারাপার হয়। ঈদ বা উৎসবে যানবাহনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। তবে ২৫ জুন দক্ষিণবঙ্গের আরেক নৌপথ মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর পাল্টে যায় দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র। আগে দৌলতদিয়ার সড়কে ফেরির অপেক্ষায় থাকতো যানবাহনের লম্বা সিরিয়াল। আর এখন যানবাহনের অপেক্ষা থাকে ফেরি। ফলে এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি ছাড়াই ঘরমুখো যাত্রীরা বাড়ী ফিরবে। এবং ঈদ শেষে অপেক্ষা ছাড়াই ফিরবে কর্মস্থল গামী মানুষ।
এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোতে ব্যহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। সেই সাথে ঢাকামুখি কোরবানির পশুবাহি ট্রাকের চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়ায়। ফলে সড়কে কিছুটা সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহি বাস ও পশুবাহি ট্রাক পারাপার করছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচলও স্বাভাবিক থাকবে। যানবাহন কমে যাওয়ায় লঞ্চে অাগের মত যাত্রীদের চাপ নাই।
স্থানীয় মজনু মোল্লা বলেন, ঘাটের যে পরিস্থিতি অাছে, তাতে এবার ঈদে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকতে হবে না যানবাহন গুলোকে। সরাসরি তা অাসা-যাওয়া করতে পারবে।
যাত্রী নুরুল ইসলাম, ফরিদুর রহমান ও রাসেল বলেন, এখন যেহেতু ভোগান্তি নাই, তাহলে ঈদেও ভোগান্তি হবে না। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কারণে দৌলতদিয়ার ভোগান্তি দুর হয়েছে। অার অাগের মত সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে না। সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছেন। ফলে ঈদ যাত্রাও ভাল হবে বলে তারা অাশাবাদী।
ট্রাক চালক ইমরান অালী বলেন, ৫ থেকে ২০ ঘন্টা। অাবার কোন কোন সময় দিনের পর দিন দৌলতদিয়ায় ফেরির অপেক্ষা থেকে কষ্ট করেছেন। তবে এখন অার কষ্ট করতে হচ্ছে না। দ্রুত ফেরির নাগাল পাচ্ছেন। পদ্মা সেতুর কারণে তাদের মত ট্রাক চালকদের খুব সুবিধা হয়েছে। ঈদে অার ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এখন দ্রুত মালমাল পৌছে দিয়ে বাড়ী ফিরতে পারবেন।
চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী গরুর মালিক অালমগীর বলেন, গত বছর ঘন্টার পর ঘন্টা দৌলতদিয়া অাটকে থেকেছেন। কিন্তু এবার সরাসরি এসে ফেরি পেয়েছেন। কোন ভোগান্তি পোহাতে হয় নাই। সময় মত গরু হাটে তুলতে পারবেন।
রাবেয়া পরিবহনের চালক মোঃ মিন্টু ও গোল্ড্রেন লাইনের চালক দুলাল শেখ বলেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে তারা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি পারাপার গাড়ি চালান। এখনকার মত সরাসরি কখনও ফেরিতে উঠতে পারেন নাই। কিছু দিন অাগেও ঘন্টার ঘন্টা জ্যামে অাটকে থাকতে হয়েছে। অার এখন তার উল্টো চিত্র। মুহুর্তের মধ্যে ফেরি পাচ্ছেন। পদ্মা সেতু চালু হবার পর অপেক্ষা ছাড়া তারা সুন্দর ভাবে ফেরিতে উঠতে পারছেন। ফলে অাশা করছেন ঈদেও তারা এভাবে পারাপার হতে পারবে। এবং যাত্রী ও তাদের কোন ভোগান্তি হবে না।
(Visited 85 times, 33 visits today)
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।