উপকূলের জেলে পরিবারগুলোয় কোরবানির হাসি

উপকূলের জেলে পরিবারগুলোয় কোরবানির হাসি

৭ June ২০২৫ Saturday ৫:২৬:৩৮ PM

Print this E-mail this


পাথরঘাটা ((বরগুনা) প্রতিনিধি:

উপকূলের জেলে পরিবারগুলোয় কোরবানির হাসি

পাথরঘাটার উপকূলীয় গ্রাম। সিডরের ১৭ বছর পেরিয়ে গেছে।তবুও স্বামী হারানো লাভলী বেগমের অপেক্ষা শেষ হয়নি। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন তার স্বামী।

পাথরঘাটার উপকূলীয় গ্রাম। সিডরের ১৭ বছর পেরিয়ে গেছে।তবুও স্বামী হারানো লাভলী বেগমের অপেক্ষা শেষ হয়নি। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন তার স্বামী।

সেই থেকে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে, প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দিন চলে লাভলীর। মাথার ওপর ভাঙা চাল, শ্বশুরের রেখে যাওয়া একটুকরো কুঁড়ে ঘরই তার ঠিকানা। 

এমন গল্প শুধু লাভলীর নয়। পাথরঘাটার অনেক নারীই এমন জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন— কারও স্বামী নিখোঁজ, কেউ বিধবা, কেউ স্বামী পরিত্যক্তা। দারিদ্র্যের গ্লানিতে, জীবনের অনিশ্চয়তায় চোখে জল লুকিয়ে রাখলেও, ঈদের কোরবানির দিনে একটুকরো মাংস পেয়ে তাদের মুখে ফুটে ওঠে একফোঁটা হাসি। 

কোরবানির মাংস বিতরণের খবর পেয়ে ছুটে আসেন লাভলী, আলেয়া, মর্জিনা ও রিনা বেগম। চোখে ছিল লাজুক জল, মুখে শুকনো হাসি। তাদের হাতে যখন তুলে দেওয়া হয় কোরবানির মাংস, তখন সেই হাসিতে জেগে ওঠে তৃপ্তির দীপ্তি। 

দরিদ্রদের ঘরে ঘরে গিয়ে এই মাংস পৌঁছে দেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সাদাকাহ ইউএসএ’ এবং স্থানীয় গবেষণাভিত্তিক সংগঠন ‘পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’। এ বছর প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারকে দেওয়া হয় কোরবানির মাংস। 

রিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী সাগরে নিখোঁজ হয় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে। সেই থেকে সন্তানসহ কোনো রকমে বেঁচে আছি। এই মাংস পেয়ে অন্তত একবেলা পেটভরে খেতে পারবো। 

সালেহা, মর্জিনা ও রিনা জানান, যারা এই মাংস পেয়েছেন, তারা অনেক খুশি। অনেক জায়গায় মাংস দিলে খুব কম দেয়। কিন্তু এখানে যা পেয়েছেন তারা, সেটি দিয়ে ভালোমতো খেতে পারবেন। 

সাদাকাহ ইউএসএর প্রধান নির্বাহী মাওলানা শহিদুল্লাহ বলেন, আমরা দেশের ১৬টি স্থানে দরিদ্র মানুষের মাঝে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য সবার সহানুভূতি এবং দানকে অসহায় মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। 

এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার কীর্তনীয়া বলেন, বিদেশে থেকেও যাঁরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করছেন, এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক, এটাই প্রত্যাশা।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts