আমেরিকা যেমন ভিয়েতনামে প্রতিটি যুদ্ধ জিতেছিল, কিন্তু পুরো যুদ্ধ হেরে গিয়েছিল, তেমনি ইসরায়েলও মাঠে জয় পেলেও রাজনৈতিকভাবে, নৈতিকভাবে ও কৌশলগতভাবে হেরে গেছে।
ভিয়েতনামে ৮ বছরে আমেরিকা ৫০ লাখ টন বোমা ফেলেছিল। গাজায় ইসরায়েল মাত্র এক বছরে এক লাখ টন বোমা ফেলেছে। হিসাব করলে দেখা যায়, ভিয়েতনামে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১৫ টন বোমা পড়েছে, আর গাজায় পড়েছে ২৭৫ টন—১৮ গুণ বেশি।
তারপরও গাজাবাসী এলাকা ছাড়েনি। উত্তর গাজা খালি করতে না পেরে ইসরায়েল এখন দক্ষিণে রাফায় লোকদের পাঠাতে চায়। যাদের পাঠানো হবে, তারা আর কখনো ফিরতে পারবে না।
এটিই ইসরায়েলের ‘অপারেশন গিডিওনের রথ’-এর মূল উদ্দেশ্য।
নেতানিয়াহু বলছেন, হয়তো যুদ্ধবিরতি হবে, কিন্তু যুদ্ধ থামবে না। তবে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা গুরুতর এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন উগ্রপন্থী নাফতালি বেনেট।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিল দুটি শক্তি—ভিয়েতনামিদের দৃঢ়তা ও মার্কিন জনগণের বিবেক। আজ একই ঘটনা ঘটছে গাজায়। ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি ছাড়ছে না। তারা মরছে, কিন্তু আত্মসমর্পণ করছে না।
আর পশ্চিমা বিশ্বে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও বামপন্থীদের মধ্যে—ইসরায়েলের বিরোধিতা প্রবল হচ্ছে। এখন আর কেউ ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ বলে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে পারছে না।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ইসরায়েল প্রতিটি যুদ্ধে জিততে পারে। কিন্তু এই যুদ্ধের ক্ষেত্রে মানবতা, ন্যায়বিচার, বিবেক ও ইতিহাসের আদালতে তারা ইতিমধ্যেই হেরে গেছে।
দ্য মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া
ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে অনূদিত।
ডেভিড হার্স্ট মিডল ইস্ট আই-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক