ইসমাইলি সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা আগা খানের জীবনাবসান – DesheBideshe

ইসমাইলি সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা আগা খানের জীবনাবসান – DesheBideshe

ইসমাইলি সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা আগা খানের জীবনাবসান – DesheBideshe

বের্ন, ০৫ ফেব্রুয়ারি – বিশ্বখ্যাত আধ্যাত্মিক নেতা, মানবসেবী এবং সফল উদ্যোক্তা প্রিন্স করিম আগা খান ৮৮ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছেন। শিয়া ইসলামের ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ৪৯তম বংশগত ইমাম হিসেবে তিনি ১৯৫৭ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে দাদার স্থলাভিষিক্ত হন।

আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একেডিএন) মঙ্গলবার স্থানীয় সময় এক বিবৃতিতে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে জানায় যে, তিনি পর্তুগালের লিসবনে শান্তিপূর্ণভাবে ইন্তেকাল করেছেন। সংস্থাটি আগা খানের পরিবার এবং বিশ্বব্যাপী ইসমাইলি সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে।

প্রিন্স করিম আগা খান দাতব্য ও উন্নয়নমূলক কাজে নিবেদিত ছিলেন। তার নেতৃত্বে একেডিএন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, দারিদ্র্য বিমোচন ও সাংস্কৃতিক সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা আগা খানের লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ চালিয়ে যাবে।

বিশ্বব্যাপী প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ইসমাইলি মুসলমানের মধ্যে পাকিস্তানে প্রায় ৫ লাখ এবং ভারত, আফগানিস্তান ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিশালসংখ্যক অনুসারী রয়েছেন। সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী প্রিন্স করিম আগা খান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভ করেন এবং ফ্রান্সে বসবাস করতেন। ব্যক্তিগত দ্বীপ, সুপার ইয়ট ও ব্যক্তিগত বিমানের মালিক হওয়ায় বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যবসায়িক স্বার্থের মধ্যে তিনি বিশেষভাবে রেসের ঘোড়ার মালিক ও প্রজননকারীরূপে পরিচিত ছিলেন। তার মালিকানাধীন শেরগার নামের বিখ্যাত ঘোড়াটি ১৯৮১ সালে এপসম ডার্বি জয় করলেও ১৯৮৩ সালে অপহরণের পর আর সন্ধান মেলেনি। এছাড়া, শাহরাস্তানি, কাহ্যাসি, সিন্দার ও হারজান্দ নামের ঘোড়াগুলোর সঙ্গেও তিনি বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতা জয় করেন।

ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার প্রয়াত মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন আগা খান। তার মৃত্যুতে রাজা চার্লস গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আগা খানের দূরদর্শিতা, বিশ্বাস ও মানবসেবার প্রশংসা করে বলেছেন, “দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা ও লিঙ্গ সমতার জন্য তার প্রচেষ্টা অসংখ্য মানুষের জীবনে অমোচনীয় ছাপ রেখে গেছে।”

আগা খানের দাতব্য সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে শত শত হাসপাতাল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রকল্প পরিচালনা করে। তিনি পাকিস্তানের করাচিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং হার্ভার্ড ও এমআইটির যৌথ উদ্যোগে ইসলামিক আর্কিটেকচার সংক্রান্ত একটি গবেষণা কর্মসূচি চালু করেন। ভারতের ঐতিহ্য সংরক্ষণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, বিশেষ করে দিল্লির ঐতিহাসিক হুমায়ুনের সমাধির পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে তার অবদান অনস্বীকার্য।

এনএন/ ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫



Explore More Districts