| ১৩ October ২০২৫ Monday ২:০৫:৩০ PM | |
পাথরঘাটা ((বরগুনা) প্রতিনিধি:

ইলিশ রক্ষায় সাগর ও অভয়াশ্রমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় আয়-রোজগার বন্ধ ৩৮ জেলার জেলেদের। এখনও সরকারি সহায়তা পায়নি অনেক পরিবার। তাদের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। আবার কিছু জায়গায় সহায়তা দেয়া হলেও অভিযোগ উঠছে নানা অনিয়মের।
মাছ ধরেই চলে বরগুনার জেলে বশিরের পরিবার। কিন্তু, মা ইলিশ রক্ষায় বিভিন্ন নদী ও সাগরে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় তিনি।
তবে ১০ দিনেও মেলেনি কিছুই। এরমধ্যে ফুরিয়েছে ঘরের চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য। তাই সন্তানদের নিয়ে এখন অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করতে হচ্ছে তার পরিবারকে। বশির ও তার স্ত্রী বলেন, ‘ঘরে এক মুঠো চালও নেই। একেবারে অসহায় অবস্থায় আছি। মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ আমরা জানি না। সকালে পাশের বাড়ি থেকে দু’মুঠো ভাত এনে ছেলেকে খাইয়ে মাদ্রাসায় পাঠিয়েছি। দুপুরে কী খাওয়াব, তা জানি না।’
শুধু জেলে বশির নন, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় বিপাকে উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার। কিছু জেলায় সহায়তা হিসেবে দেয়া হয়েছে ২৫ কেজি করে চাল। তবে এতেও উঠেছে নানা অনিয়মের অভিযোগ।
জেলেদের অভিযোগ, বরাদ্দের ২৫ কেজি চালের মধ্যে ১৮ থেকে ২০ কেজি পাচ্ছেন তারা। এতে ২২ দিনে সহায়তা হিসেবে দৈনিক মিলছে মাত্র ৮শ থেকে ৯শ গ্রাম চাল। যার বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। অথচ সংসার খরচ প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শ টাকা।
নামমাত্র এ সহায়তাও দুর্দশা দূর করতে পারছে না জেলে পরিবারগুলোর। তারা বলছেন, বেশিরভাগ জেলে পরিবার হতদরিদ্র। অনেকের ঘরেই চাল নেই। কাজ না থাকায় ধার-দেনা করেও সংসার চলছে না।
জেলে পরিবারগুলোর জন্য চালের সঙ্গে আর্থিক সহায়তাও দেয়ার প্রয়োজন দেখছেন তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। বাংলাদেশ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দেয়া হয় মাত্র ২০-২৫ কেজি চাল। তবে এর সঙ্গে ২ হাজার করে টাকা দিলে জেলেরা কোনোরকমে খেয়ে বাঁচতে পারত।
অবশ্য মৎস্য অধিদফতর বলছে, সহায়তা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। বরাদ্দের ২৫ কেজি চাল নির্ধারিত সময়ে পাওয়া নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে। মৎস্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘প্রতি পরিবারের জন্য ২২ দিনে ২২ কেজি ইলিশ দেয়া পূর্বনির্ধারিত। তবে বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাবি এসেছে যে সহযোগিতার পরিমাণ আরও বাড়ানো দরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছেন এবং চেষ্টা করছেন যাতে ভবিষ্যতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো যায়।’
শুধু চলতি বছর নয়, বরগুনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের হাতে সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হয় প্রতি বছরই। এতে কষ্টে জীবনযাপন করতে হয় জেলেদের।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
| শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |


