ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব পাস – DesheBideshe

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব পাস – DesheBideshe

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব পাস – DesheBideshe

তেহরান, ২০ সেপ্টেম্বর – ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে দেশটির ওপর জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইরানের অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত হিসেবে মনে করা হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে একটি প্রস্তাবের ভোটাভুটি হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় চারটি দেশ রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া। দুটি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের এই প্রস্তাব পাসের ফলে যদি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি না হয়, তাহলে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের ওপর ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল হবে যা ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির আওতায় প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

এর আগে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় গত মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের প্রধান নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। তার আগে গত মাসের শুরুর দিকে ই-থ্রি বলে পরিচিত এই তিন ইউরোপীয় দেশ সতর্ক করে জানায়, ইরান কূটনৈতিক সমাধানে রাজি না হলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হবে।

তবে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইরানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, এই তিন ইউরোপীয় দেশ ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে (এনপিটি) থাকা বিরোধ মিমাংসা ব্যবস্থার অপব্যবহার করেছে।

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ইউরোপীয়রা যা করছে তা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা যৌথ পরমাণু চুক্তিতে (জেসিপিওএ) অন্তর্ভুক্ত ব্যবস্থার অপব্যবহার চেষ্টার মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে ভুল করছে।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ই-থ্রি দেশগুলো ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির স্বাক্ষরকারী। ওই চুক্তির আওতায় ইরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা।

তবে, ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এ চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ২০১৯ সালে ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিজস্ব অঙ্গীকার শিথিল করতে শুরু করে। এর মধ্যে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত জুনে ইসরাইল ইরানের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর লক্ষ্যবস্তু ছিল পরমাণু ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক এলাকাও। এ হামলায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরাও ছিলেন।

ইরান পাল্টা প্রতিশোধ নিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে ইসরাইলে ডজনখানেক মানুষ নিহত হন। পরে যুক্তরাষ্ট্রও সাময়িকভাবে ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। তবে ১২ দিনব্যাপী যুদ্ধের পর  যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো হয়।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে ইরান জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে নতুন এক ‍চুক্তি করে যার আওতায় সংস্থাটিকে তেহরানের পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের অনুমতি দেয়ার কথা বলা হয়। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর সহযোগিতা স্থগিত করে তেহরান। এরপরও ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হলো।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
এনএন/ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫



Explore More Districts