আলোকচিত্রপুরাণের অন্দর কথা

আলোকচিত্রপুরাণের অন্দর কথা

ফরাসি দেশে আবিষ্কৃত ক্যামেরা যখন বাঙালির কাছে বিজ্ঞানের আগ্রহোদ্দীপক উপকরণ হিসেবে পৌঁছায়, তখন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্যরা শখের বশে এর চর্চা শুরু করেন। জোসেফ নিসেফোর নিপেস ও লুই ডাগুয়েরের সম্মিলিত ফটোগ্রাফি চর্চা বাংলার উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীদের অনুপ্রাণিত করে। নতুনকে জানা ও প্রয়োগের নেশায় শুরু হয় চর্চার আরেক অধ্যায়; আর সেই চর্চার প্রথম প্রকাশমাধ্যম ছিল কলকাতার জোড়াসাঁকো থেকে প্রকাশিত অমৃতলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত একটি পত্রিকা শিল্পপুষ্পাঞ্জলি। এরপর ফটোগ্রাফি চর্চা প্রবেশ করে ঠাকুর বাড়িতে। ফলে সাধনা পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর। উল্লেখ্য, তাঁর মা জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ছিলেন তখনকার দিনের নামকরা আলোকচিত্রশিল্পী। বাংলার অন্যতম বিজ্ঞানসাধক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীও জড়িয়ে পড়েন নতুন এই শিল্পকর্মে। সে সময়ের আলোকচিত্রজগতের সব খোঁজখবর ছিল তাঁর নখদর্পণে।

পূর্ববঙ্গের বংশোদ্ভূত চিত্রকর ও আলোকচিত্রী আদীশ্বর ঘটক রচিত ফটোগ্রাফি শিক্ষা বাংলা ভাষায় মুদ্রিত ফটোগ্রাফিবিষয়ক প্রথম গ্রন্থ। এরপর মন্মথনাথ চক্রবর্তী, আনন্দকিশোর ঘোষ, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, ঠাকুর মহিমচন্দ্র দেববর্মা, ড. সতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার রায়, হেমেন্দ্রকুমার রায়, নরেন্দ্র দেব, পরিমল গোস্বামী, পরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত প্রমুখ প্রতিভাধর ব্যক্তিদের লেখায় বিকশিত হয় ফটোগ্রাফি চর্চা। আর এসব গুরুত্বপূর্ণ লেখা সম্পাদক আহরণ করেন ১৮৮৫ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পর্যায়ের বাংলা সাময়িকপত্রসমূহ ঘেঁটে।

Explore More Districts