আমাদের-তোমাদের-তাহাদের ঈদ

আমাদের-তোমাদের-তাহাদের ঈদ

শহরে যারা ভাড়া থাকে, ঈদে তাদের তাড়া থাকে। যাওয়ার তাড়া। গ্রামে যাওয়ার তাড়া। শহরে তাদের ফ্ল্যাট নাই। গাড়ি নাই। বাড়ি নাই। কিন্তু ‘দেশের বাড়ি’ আছে। শহর থেকে দূরে সেই বাড়ি। বাসে কিংবা ট্রেনে, লঞ্চ কিংবা প্লেনে সেই বাড়িতে যেতে হয়। সে বাড়িতে নিদেনপক্ষে এক ফালি উঠোন আছে। উঠোনের কাছেপীঠেই বুনো কচু কিংবা কাগজিলেবুর ঝোপ আছে। সেই ঝোপে শয়ে শয়ে মশা অথবা জোনাকি ওড়া সন্ধ্যা আছে। সন্ধ্যায় ঘরের ভেতর জায়নামাজে নামাজরত আব্বা কিংবা আম্মা আছে।

কাজের চাপে সেই বাড়ির কথা সারা বছর ভাড়াটেরা মনে করতে পারে না। আর ঈদের সময় চেষ্টা করেও সেই উঠোন, সেই কাগজিলেবুর ঝোপ, সেই শয়ে শয়ে জোনাকিজ্বলা সন্ধ্যা ভুলে থাকতে পারে না। বাড়ি ডাকে। নাড়ি ডাকে। মনে পড়ে দেশের বাড়ি। মনে ভেসে যায় অলকানন্দা-মধুমতির জলে। ফলে বাস ভরে যায়। লঞ্চ ভরে যায়। গাদাগাদি। ঠাসাঠাসি। হুড়োহুড়ি। আস্তে আস্তে আস্ত একটা ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যায়।

দেশের বাড়ির ফাঁকা ঘর আপনজনে ভরে ওঠে। দাদির কোলে, নানির কোলে শহরফেরত ‘ফুলবাবুরা’ ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাঁপিয়ে ওঠা জীবনগুলো প্রাণ ফিরে পায়। চাঁদ উঠলে পাড়ায় পাড়ায় লাউডস্পিকার…। মফস্বলের মোড়ে মোড়ে ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে…’ রাত অবধি বাজতে থাকে।

Explore More Districts