অভিযানে নেমে অবরুদ্ধ

অভিযানে নেমে অবরুদ্ধ

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
পাচার বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে চোরাকারবারিদের দ্বারা প্রায় ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলেন এসিল্যান্ড, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। গভীর রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। ঘটনাটি ঘটেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পেকপাড়া গ্রামে। এসময় চোরাকারবারি সন্দেহে ৪ জনকে আটক এবং ২১ গরু ও ৩টি মহিষ জব্দ করেছে পুলিশ।
জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় অবৈধ পাচার বিরোধী অভিযানে নামে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ফয়সল আহমদ’র নেতৃত্বে টাক্সফোর্স অভিযানে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, দোয়ারাবাজার থানার এসআই মিন্টু দেবনাথ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাবাজার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পেকপাড়া গ্রামে অভিযানকালে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ২১ টি গরু ও ৩টি মহিষ জব্দ করা হয়। এসময় চোরাকারবারিরা ‘চোর আইছে, চোর ধর- মার বলে সংঘবদ্ধ হয়ে গ্রামের আনোয়ার মেস্তরির বাড়িতে টাক্সফোর্সকে অবরুদ্ধ করে রাখে। গ্রামের মানুষের মাঝে আতংক ছড়াতে চোরাকারবারিরা বাড়ির দুইটি খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ৩ টায় দিকে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু, থানার এসআই মিজানুর রহমান সহ পুলিশ ও সীমান্তবর্তী পেকপাড়া ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
ঘটনার সময় দুইজন পিকআপ চালকের দুই সহযোগি সহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এরা হলেন- সিলেটের বিশ^নাথ থানার রহিমপুর (গ্রামের ১১টি গরুর মালিক দাবিকারি) মৃত. আছদ্দর আলীর ছেলে বশির মিয়া (৫০), পিকআপের ড্রাইভার সিলেটের গোয়ানঘাট থানার নয়ানগর গ্রামের মোস্তফা আহমদ’র ছেলে বকুল আহমদ (৩০), তার সহযোগি দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলা গ্রামের কানন মিয়ার ছেলে রকিবুল হাসান (১৬) ও পিকআপ ড্রাইভার নরর্সিদী জেলার মুন্সিপারচর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে শামীম আহমদ (৩৭)।
দোয়ারাবাজার থানার এসআই এনামুল হক মিঠু বললেন, আমাদের অবরুদ্ধ করার পর ঐ বাড়ির (আনোয়ার মেস্তরি) দুইটি খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। চারিদিকে চিৎকার চেঁচামেচি চলছিলো। এসময় আমরা আতংকের মধ্যে সময় পার করেছি। অবশেষে ইউএনও স্যার অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে আমাদের উদ্ধার করেন।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, সোমবার রাতে আমাদের একটি টাক্সফোর্স অভিযান ছিল। মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল চোরাকারবারিদের তৎপরতা কমাতে অভিযান চালানোর বিষয়ে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সল আহমদ’র নেতৃত্বে বেশ কিছু গরু-মহিষ আটক করার পর চোরাকারবারিদের সাথে উত্তেজনা দেখা দেয়।
তিনি বলেন, আটককৃত ৪ জনের ২ জন পিকআপ চালক ও ২ জন তাদের সহযোগি। ডিসি স্যার, ইউএনও স্যারের সাথে আলাপ করে পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে। আটককৃত গরু-মহিষের নিলাম কার্যক্রম চলছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সল আহমদ বললেন, টাক্সফোর্সের অভিযানে অবৈধ ২১টি গরু এবং ৩টি মহিষ আটক করার পর চোরাকারবারিরা আমাদের চারিদিক থেকে ঘেরাও করে। আতংক ছড়াতে গ্রামের একটি বাড়ির খড়ের গাদায় আগুনও ধরিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিক আমি ইউএনও স্যার ও ডিসি স্যারকে বিষয়টি জানাই। পরবর্তিতে ইউএনও স্যার আমাদের উদ্ধার করেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার সময় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। এসময় পুলিশ ও পেকপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরাও ছিলেন। সেখান থেকে আসতে আসতে ভোর হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বললেন, চোরাকারবারিরা আটকে রাখেনি, ওখানে অভিযান চালানোর সময় অতিরিক্ত ফোর্সের প্রয়োজন পড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানো পর্যন্ত অগ্রবর্তী দল অপেক্ষা করেছিল।

Explore More Districts