অভাবের সংসার, ভ্যান না চালিয়ে করবো কি?

অভাবের সংসার, ভ্যান না চালিয়ে করবো কি?

মহসিন মোল্যা, বিশেষ প্রতিবেদক-

ছোট্ট শিশু আলহাজ্ব৷ মাত্র আট বছর বয়সেই বাবার সংসারের হাল ধরেছে। যে বয়সে মা-বাবার সান্নিধ্য, লেখাপড়া ও বন্ধুদের সাথে খেলাধুলার মাঝে সময় কাটানোর কথা ছিলো শিশুটির। কিন্তু সে বসয়েই হাতে তুলে নিয়েছে ইঞ্জিন চালিত ভ্যান গাড়ি।

শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের অসহায় এক পরিবারে চরম দারিদ্র্যতার মাঝে বেড়ে ওঠা তার। বাবা আকিদুল ইসলাম একজন শ্রমিক। বাবার উপার্জনের টাকায় সংসার চলে না৷ তাই বাবা শ্রমিকের কাজে গেলে প্রতিনিয়ত ইঞ্জিন চালিত ভ্যান গাড়িটি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। সারাদিনে ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ উপার্জন করে। কোনদিন এ উপার্জনের  কম, আবার কোন দিন বেশি ও হয়। দিন শেষে উপার্জনের সব টাকা বাবার হাতে তুলে দেই।

সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলের নাম ও সে ঠিক মত বলতে পারে না। তবে সে স্কুলে যাই৷ স্কুল বন্ধ থাকায় এখন দু’বেলায় ভ্যান নিয়ে বের হয়। শ্রীপুর-ওয়াবদা গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রায়ই ইঞ্জিন চালিত ভ্যান গাড়ি চালাতে দেখা যাই তাকে। এ বয়সে কেন ভ্যান চালাই এমন প্রশ্নের জবাবে শিশু আলহাজ্ব বলে, অভাবের সংসার। না চালিয়ে কি করবো?

এ বিষয়ে আলহাজ্ব এর বাবা আকিদুল ইসলাম বলেন, অভাবের সংসার তাই আমার আলহাজ্ব ভ্যান নিয়ে রাস্তায় ভাড়া মারে। আমরা সারাক্ষণ খুব চিন্তায় থাকি৷ ওর মুখের দিকে তাকাতে খুব কষ্ট হয়। অভাবের কাছে আমি হেরে গেছি৷ তাই তো আমার শিশুটির হাতে ভ্যান তুলে দিয়েছি।

এ বিষয়ে স্থানীয় সব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. পান্না খাতুন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার আমি করে আসছি। তার পরিবার শিশুটির হাতে ইঞ্জিন চালিত ভ্যান তুলে দিয়ে ঠিক করেনি। শিশুটির জন্য আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করবো।

Explore More Districts