সরকারি নজরদারির অভাবে যশোরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অপরাধ কর্মকা- চলছে। বিশেষ করে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তয়নের ঘাটিতে পরিণত হয়েছে। এরমধ্যে শীর্ষে রয়েছে যশোর সরকারি এম এম কলেজ সংলগ্ন শাহীন স্কুলটি। এ স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াত ইসলামী, জঙ্গি ও নাশকতাসহ অসামাজিক কর্মকা-ে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
বছর দুই আগে এ স্কুলের এক শিক্ষার্থী দু’দল ডাকাতের গুলাগুলিতে নিহত হয়। কিন্তু তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
যশোর সরকারি এম এম কলেজ সংলগ্ন শাহীন স্কুলটি পরিচালিত হয় টাঙ্গাইল থেকে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক টাঙ্গাইলের। তারা তারা এখানে এসে স্কুলের ছত্রছায়ায় থেকে গোপনে অপরাধ মূলক কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুলের শিক্ষক হয়ে সহজেই অপরাধ মূলক কর্মকা- করে পার পেয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষক জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য তারা বিভিন্ন সময় নাশকতা মূলক কর্মকা- করে থাকে।
সূত্র জানায়, এর আগেও এই স্কুলের বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উল্টো একটি অনুষ্ঠান করে সেখানে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অতিথি করে নিয়ে আসা হয়েছে। যাতে করে পুলিশী হয়রাণি ঠেকানো যায়।
শুধু তাই নয়, স্কুলের সব দায়িত্ব পালন করে টাঙ্গাইলের লোক। তারাই মূলত স্কুলটি পরিচালনা করে থাকে। আর এম এম কলেজের কয়েকজন ছাত্র নাম মাত্র শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোন শিক্ষক নেই। সব কিছু
এ ব্যাপারে স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ইমরান বাদশাহকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে একটা নিউজ করেছেন। আপনারা আসবেন চা-টা খাবেন। কথা বলবেন। তারপর না হয় নিউজ করবেন। আগে থেকে কোন কথা না বলে নিউজ করলেন। তিনি বলেন, স্কুলের আরও একজন পরিচালক আছে তার সাথে কথা বলেন।
স্কুলের পরিচালক ইজাজ আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্কুলের বর্তমান শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী কত ? তিনি এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো বলেন, আপনারা তো নিউজ করেছেন। আপনারা তো সব জানের। এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম গোলাম আজম বলেন, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন নেই, তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব আমাদের মধ্যে পড়ে না। কেউ যদি কোন বাড়ি ভাড়া করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে তার দায়িত্ব তাদের।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি সম্পর্কে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য কমিটি থাকে। সেই কমিটি স্কুলের শিক্ষার পাশাপাশি তার সব ভালোমন্দ দেখে থাকে। তারাই মূলত: স্কুল পরিচালনা করে। তবে কোন অপরাধ হলে কিম্বা অপরাধীদের আস্তানা হলে প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।