শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজকে ভাসানী নামকরণের দাবি

শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজকে ভাসানী নামকরণের দাবি

শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে পূর্বের ন্যায় মওলানা ভাসানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামকরণ করার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যের শিকার শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দের উদ্যোগে আয়োজিত ‘শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ফ্যাসিবাদ ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।

শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ডাইরেক্টর এডমিন কে. এম. গোলাম মাওলা কলেজের পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফ্যাসিবাদের দোসর মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তমাল মনসুর, সাবেক সংসদ সদস্য তানভির শাকিল জয় এবং তার স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ পালিয়ে গেলেও ৫ আগষ্টের পরবর্তীতে তাদের নিয়োগকৃত দোসর সামরিক বাহিনীর অবসর প্রাপ্ত কতিপয় স্বার্থলোভী সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইসরাত হোসেন (অবঃ)-উপদেষ্টা, লে. কর্ণেল আবু নওরোজ খুরশীদ আলম (অবঃ)-সিইও এবং ক্যাপ্টেন সাদাফ আবরার রাইয়ান (অবঃ) সহ আরও কতিপয় কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে তাদের দ্বারা ফ্যাসিজমের কার্যক্রম চালু রেখেছে। বিগত ১৫ বছরের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে অবৈধভাবে সহস্রাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরী থেকে বিতারিত করা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ভাবে বিভিন্ন হয়রানির স্বীকার হতে হয়েছে। বর্তমানে ফ্যাসিষ্টদের নিয়োগকৃত অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদ্বারা একইভাবে প্রতিবাদী সকলের বিরুদ্ধে ন্যাক্কারজনক হুমকি-ধমকি, হামলা এবং মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দ্বারা প্রতিবাদের কন্ঠরোধে ব্যস্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের নাম তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে পরিবর্তন করে জাতীয় নেতা
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে মওলানা ভাসানী মেডিকেল কলেজ এবং প্রতিষ্ঠানটিকে যাতে করে কোনো পরিবারের হাতে জিম্মি হতে না হয়ে এটি জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয় সেজন্য ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস এটিকে ট্রাষ্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপদানের জন্য মওলানা ভাসানী ট্রাষ্ট গঠন করে মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল এবং নার্সিং ইনষ্টিটিউট ট্রাষ্টের প্রতিষ্ঠান হিসেবে একীভূত করেন। যা ট্রাষ্ট হিসেবে রেজিষ্টার জয়েনষ্টক থেকে যথাযথ ভাবে ২০০৪ সালে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে এবং ট্রাস্টিদের ট্রাষ্ট রেজিস্ট্রেশন সাব রেজিষ্ট্রি অফিসেও দালিলিক ভাবে রেজিষ্ট্রার করা হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে ফ্যাসিবাদী সরকার গঠিত হলে এর দোসর মোহাম্মদ নাসিমের পরিবার তথা তার স্ত্রী মিসেস লায়লা আরজুমান্দ, তার সন্তান তমাল মনসুর, তার আর এক সন্তান সাবেক সংসদ সদস্য জনাব তানভির শাকিল জয়সহ অন্যান্য পারিবারিক সদস্যগণ অস্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভয়-ভীতি দেখিয়ে সমাজের প্রতিষ্ঠিত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত মওলানা ভাসানী ট্রাষ্টের সদস্যদের পদত্যাগে বাধ্য করে আবার জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে গ্রাস করে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকা ভুয়া বিলের মাধ্যমে লুটপাট এবং দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে প্রায় দেওলিয়া করে ফেলেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তমাল মনসুর ও তার ভাই তানভির শাকিল জয় সহ তাদের পরিবারের দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবেদন গত ০৩-০৯-২০২৪ তারিখ জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগষ্ট ২৪ এর বিপ্লবকালীন সময় আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা না দিয়ে তমাল মনসুর, মিসেস লায়লা আরজুমান্দ, তানভির শাকিল জয় এবং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন ফ্যাসিবাদী কায়েম রাখার স্বার্থে উক্ত সময় অমানবিক ভাবে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের মূল ফটক বন্ধ রেখে সকলকে চিকিৎসা প্রদানে বাধা দান করে। মূল ফটক বন্ধ থাকায় বহু সংখ্যক ছাত্র-জনতা চিকিৎসা না পেয়ে অন্যান্য হাসপাতালে যেতে বাধ্য হয় এবং যথা সময় চিকিৎসা না পেয়ে বহু সংখ্যক আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ডা. সজিব। ডা. সজিব যথা সময়ে চিকিৎসা পেলে হয়ত আমাদের একজন মেধাবী চিকিৎসককে হারাতে হতো না।

তিনি বলেন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে বৈষম্যের শিকার শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যায় বিচার ও স্ব-স্ব পদে পুনর্বহাল এবং জুলাই-আগষ্ট ২০২৪ এর বিপ্লবের সময় এবং বর্তমান পর্যন্ত অপকর্মের সহিত জড়িত তমাল মনসুর, মিসেস লায়লা আরজুমান্দ, তানভির শাকিল জয় এবং বর্তমান প্রশাসনে নিয়োজিত তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

Explore More Districts