শুধু চাকুরী পেতে নয়, চাকুরী পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলিতেও তদবির ও দুর্নীতির সংবাদ হরহামেশাই উঠ আসে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে েএকটি ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। আর এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি হলো ঘুষ ও তদবির ছাড়া লটারীর মাধ্যমে বদলি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ৩য় শ্রেণীর ৫৭জন কর্মচারীকে বৃহস্পতিবার এই লটারি পদ্ধতি অবলম্বন করে বদলি করা হয়েছে। সবার সামনে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে এই বদলি করা হয়। তদবির বন্ধ এবংদুর্নীতি কমাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়।
একজন করে এসে বক্সে রাখা উপজেলার নাম তোলেন, যে উপজেলার নাম উঠে তাকে সেখানে বদলি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারের উপস্থিতি এই লটারি করা হয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম,এনডিসি ফরিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কয়েকজন তাদের পছন্দ মতো উপজেলায় বদলি হতে না পেরে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও এই প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ছিলো বলে তারা জানান।
অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের সামনে রাখা বাক্স থেকে উপজলার নাম তুলে নিচ্ছেন। লটারির মাধ্যমে এই নাম তোলার বিষয়টিকে তারা ইউনিক বলে মন্তব্য করেন। কেউ তাদের বক্তব্যে নিকটবর্তী উপজেলায় রাখারও আবদার জানান। জেলা প্রশাসক সবার সমান অধিকার বলে তা নাকচ করেন। তবে অবসরের অল্প সময় বাকি ও বেশি অসুস্থদের বিষয়টিতে ছাড় দেন।
অফিস সহকারী প্রতীমা রানী চক্রবর্তী কাজ করতেন চান্দিনা উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে। লটারিতে আদর্শ সদর উপজেলায় তার নাম উঠেছে। তিনি বলেন, এত বছর চাকরি জীবনে এই নিয়ম আর দেখিনি। এই প্রথম এই রকম ব্যতিক্রম নিয়ম দেখলাম। ভালো লাগলো।
দাউদকান্দির উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলমগীর কবির চৌধুরী বলেন, এই প্রক্রিয়াটি সবার সামনে লটারিতে হওয়ায় বদলির বিষয়টি স্বচ্ছ হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের এই পরিকল্পনা আমরা খুশি।
নাঙ্গলকোটের আবুল বাশার বলেন, যেন পক্ষপাতিত্ব না হয় সেজন্য লটারি করা হয়েছে। পদ্ধতিটি ভালো হয়েছে। আমাদের উপজেলা থেকে উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, দীর্ঘদিন এক স্থানে থাকলে কিছু কর্মচারীর দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার আশংকা থাকে। এছাড়া বদলির বিষয়ে অনেক তদবির আসে। তাই সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লটারির মাধ্যমে বদলির উদ্যোগ নিয়েছি। তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সবার সামনে আলোচনার মাধ্যমে ছাড় দেয়া হয়েছে। এবার ৫৭জন ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকিদেরও করা হবে।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,
০৬ নভেম্বর ২০২৫

